‘কিছু প্রশাসনিক পদক্ষেপে তৈরি অবিশ্বাসের বাতাবরণ’, কুণালের পোস্টে জল্পনা https://ift.tt/V6KIWua - MAS News bengali

‘কিছু প্রশাসনিক পদক্ষেপে তৈরি অবিশ্বাসের বাতাবরণ’, কুণালের পোস্টে জল্পনা https://ift.tt/V6KIWua

এই সময়: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদের মুখে রাজ্য প্রশাসন সব ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ সঠিক পদক্ষেপ করতে পারছে না— কিছুদিন আগে ঘনিষ্ঠ মহলে এমনই মনোভাব ব্যক্তি করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের এই পর্যবেক্ষণের সঙ্গে তাল মিলিয়েই আরজি কর ইস্যুতে প্রশাসনের কিছু পদক্ষেপ নিয়ে রবিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন তুললেন কুণাল ঘোষ। রাজ্যসভায় তৃণমূলের এই প্রাক্তন সাংসদ এ দিন এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘প্রশাসনের কিছু পদক্ষেপকে মানুষ ভুল বুঝেছেন। সেখান থেকে বিরক্তি, অবিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে বলেই নাগরিকদের পথে নামতে হচ্ছে।’ প্রশাসনের ঠিক কোন কোন পদক্ষেপ নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্ন, অবিশ্বাস বা ধন্দ তৈরি হয়েছে, তা নির্দিষ্ট করেন বলেননি কুণাল। কিন্তু এই পদক্ষেপগুলির কারণেই অবিশ্বাসের বাতাবরণ থেকে নাগরিক সমাজ প্রতিদিন পথে নামছে বলে মনে করছেন তিনি। এক্স হ্যান্ডলে তাঁর সংযোজন, ‘প্রশাসন এমন কোনও কাজ করবে কেন, যে অবস্থা সামলাতে শাসক দলকেও বিচার চাই বলে কর্মসূচি নিতে হবে? তাও দলের সবাই সমান ভাবে নামেন না। প্রশাসনের কিছু পদক্ষেপ মানুষ ভালো ভাবে নেননি। সেটা প্রশাসন দেখুক। এই নিয়ে নাগরিক আন্দোলন সমর্থনযোগ্য।’আরজি কর ইস্যুতে যেখানে বিরোধীরা রাজ্য সরকার ও রাজ্যের শাসক দলকে নিশানা করছেন, সেখানে দলের সব স্তরের নেতৃত্ব কেন প্রতিবাদ করছেন না, কেনই বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও রি-পোস্ট করছেন না, সে প্রশ্ন আগেই তুলেছিলেন কুণাল। তবে এ দিন ‘প্রশাসনের কিছু পদক্ষেপ’ নিয়ে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় যা বলেছেন, তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। কিছু দিন আগে অভিষেকের পর্যবেক্ষণ ছিল, ‘দল ও প্রশাসন ক্ষোভের আঁচে পড়া সত্ত্বেও পরিস্থিতির মোকাবিলায় রাজ্য সরকার পুরোনো ব্যবস্থার শিকলে বাঁধা পড়ে রয়েছে। এর ফলে অভীষ্ঠ লক্ষ্য অপূর্ণ থেকে যাচ্ছে।’ কুণালের এ দিনের পোস্টের সঙ্গে অভিষেকের পর্যবেক্ষণের মিল রয়েছে বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।এই পোস্ট নিয়ে এ দিন বিকেলে বিশদ ব্যাখ্যাও দিয়েছেন কুণাল। তাঁর দাবি, নাগরিক সমাজের সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের একটি দূরত্ব তৈরি হয়েছে এবং সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের সূত্রেই এই ফিড-ব্যাক তাঁর কাছে এসেছে। কুণালের কথায়, ‘সাধারণ মানুষের সঙ্গে মেলামেশার সূত্রে কিছু তো মনোভাব পাওয়া যায়। আমাদের দায়িত্ব বেশি। দায়বদ্ধতা বেশি। তাই এর কোনও সুযোগ যাতে বিরোধীপক্ষ নিতে না-পারে, তার জন্য আত্মমূল্যায়ন করা হবে।’ আরজি করে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পর সেখানকার প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ট্রান্সফার নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। লালবাজারের কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন সামলাতে রাজ্য প্রশাসনের উদ্যোগ কতটা কার্যকরী হচ্ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। কোন প্রশাসনিক পদক্ষেপের কারণে নাগরিক সমাজে অবিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে, তা কুণাল নির্দিষ্ট ভাবে না বললেও জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘কোনও কোনও পদক্ষেপ নিয়ে বিভ্রান্তি অথবা প্রশ্ন আছে বলেই এই ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে। এমন কোনও কোনও গ্যাপ কোথাও কোথাও হয়েছে। সরকারকে এই বিষয়টি দেখতে হবে। জুনিয়র ডাক্তারদের এই আন্দোলন চলছে। তাঁদের যে বক্তব্য রয়েছে, কী ভাবে তার সুরাহা করা যায় সরকার নিশ্চয়ই দেখছে।’ আরজি করের নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গেও এ দিন ফোনে কথা বলেছেন কুণাল। যদিও এই ফোনালাপ ব্যক্তিগত বলেই তাঁর দাবি। নির্যাতিতার বাবার সঙ্গে এ দিন কুণালের কথা হয়েছে। কুণাল জানান, নির্যাতিতার পরিবারকে তিনি বলেছেন যে, তাঁর কোনও বক্তব্যে যদি তাঁরা আঘাত পান, তা হলে সঙ্গে সঙ্গে সেই বিষয়টি যেন তাঁরা জানান। যে বক্তব্যে তাঁরা আঘাত পেয়েছেন, তা সংশোধন করে নেওয়া হবে। কুণালের কথায়, ‘ওঁর বাবা বলেছেন, সবাই মিলে চেষ্টা করুন যাতে তদন্ত এগিয়ে যায়। আমার মেয়েকে কারা মারল? কেন মারল? সেটা জানতে চাই।’এই টানাপড়েনের মধ্যে এ দিন আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। ফরাসি বিপ্লব চলাকালীন বাস্তিল দুর্গ পতনের পেইন্টিং রবিবার তিনি পোস্ট করেছেন এক্স হ্যান্ডলে। সঙ্গে লিখেছেন, ‘১৭৮৯-এর জুলাই। বিক্ষুব্ধ জনতা বাস্তিল দুর্গের পতন ঘটিয়েছিল। ঐতিহাসিক ফরাসি বিপ্লব হয়েছিল।’ সুখেন্দুর এই পোস্টকে নিয়ে বিরোধীপক্ষ শাসক দলকে খোঁচা দিতে ছাড়েনি। যদিও সুখেন্দুর পোস্ট নিয়ে কুণাল এ দিন বলেন, ‘উনি ইতিহাস নিয়ে প্রচুর পড়াশোনা করেন। ঐতিহাসিক ঘটনাক্রম তাঁর জানা। কোন পরিপ্রেক্ষিতে এই পোস্ট করেছেন, জানি না। হয়তো উনি এই বিষয়ে কোনও বই পড়ছিলেন।’ রাজ্যসভায় বিজেপির সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য এ দিন কুণাল ও সুখেন্দু— দু’জনেরই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘সুখেন্দুশেখর রায় বাস্তিল দুর্গের পতনের ছবি দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন, শেষের সে দিন দূরে নেই। আত্মসমীক্ষা করার একটি সময় থাকে, তৃণমূল সরকার সেই সময়ও পেরিয়ে গিয়েছে।’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘কখনও ওঁর (কুণাল) বিবেক জেগে ওঠে, কখনও বিবেক ঘুমিয়ে পড়ে। এখন যদি বিবেক জেগে ওঠে, তা হলে শুধু প্রশাসনের ঘাড়ে দায় না চাপিয়ে প্রশাসনের শীর্ষে যিনি রয়েছেন, তাঁর দায়িত্বের কথা বলুন।’ যদিও তৃণমূলের পাল্টা যুক্তি, নাগরিক সমাজ আন্দোলন করতেই পারে। কিন্তু বাম-বিজেপি সেই ভিড়ে মিশে গিয়ে রাজনৈতিক অরাজকতা তৈরি করতে চাইছে। বাম-বিজেপি’র এই ছকের বিরুদ্ধে তৃণমূলকে প্রতিবাদ করতে হবে।


from Bengali News, বাংলা নিউজ, বাংলায় সর্বশেষ খবর, Live Bengali News, Bangla News, Ajker Bengali Khabar - Eisamay https://ift.tt/YahLCS9
Previous article
Next article

Leave Comments

Post a Comment

ads

Articles Ads 1

ads

Advertisement Ads