মঞ্চে মমতার পাশে তারকারা অসময়ে কোথায়, প্রশ্ন কুণালের https://ift.tt/sc3rbKg - MAS News bengali

মঞ্চে মমতার পাশে তারকারা অসময়ে কোথায়, প্রশ্ন কুণালের https://ift.tt/sc3rbKg

মণিপুস্পক সেনগুপ্তদৃশ্যটা চেনা হয়ে গিয়েছে। তৃণমূলের মঞ্চ ‘আলো’ করে থাকেন টলিউডের বহু তারকা। সোশ্যাল মিডিয়ায় হামেশাই ভেসে ওঠে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁদের গ্রুপ সেলফি। প্রতি বছর ২১ জুলাই টলি-তারকাদের জন্য মঞ্চে আলাদা বসার ব্যবস্থাও হয়। এ বার তাঁদেরই একহাত নিলেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ। ওই তারকাদের একাংশকে নিয়ে ভাবনা-চিন্তার সময় এসেছে বলে মনে করছেন কুণাল। তাঁর মতে, এই তারকাদের একাংশ দলের সুসময়ে হাত নেড়ে সামনে থাকেন। অথচ দলের সামনে কোনও বিতর্কিত ইস্যু এলে এঁরা মুখ বন্ধ করে দেন। কুণালের এই বক্তব্যের সঙ্গে অবশ্য সহমত নন টলিউডের অনেকেই।আরজি করের ঘটনার মধ্যেই ‘দ্য ডায়েরি অফ বেঙ্গল’ বলে একটি সিনেমা শুক্রবার কলকাতায় মুক্তি পেয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, সরকার-বিরোধী প্রচারের জন্যই তৈরি হয়েছে সেটি। অতীতেও বিজেপির পক্ষে ন্যারেটিভ তৈরি করতে এরকম বহু রাজনৈতিক সিনেমা বানানো হয়েছে বলে তৃণমূল নেতৃত্বর দাবি। সনোজকুমার মিশ্র পরিচালিত ‘দ্য ডায়েরি অফ বেঙ্গল’ সিনেমাটির মুক্তি আটকানোর জন্য হাইকোর্টে মামলাও হয়েছিল। কিন্তু আদালত ছবিমুক্তিতে হস্তক্ষেপ করেনি। সরাসরি এই সিনেমার নাম উল্লেখ না-করেই কুণাল এ দিন ফেসবুকে লেখেন, ‘মুম্বই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বহু পরিচালক, প্রযোজক, অভিনেতা এমন কিছু রাজনৈতিক ছবি করেন যা সমাজে বিজেপির পক্ষে ন্যারেটিভ তৈরি করে। এ বার তো বাংলা নিয়েও কুৎসার ঝুলি আসছে।’ এরপরই তাঁর সংযোজন, ‘অথচ টলিগঞ্জের বাবু/বিবিরা, যাঁরা মমতাদির পাশে, দলে, মঞ্চে, ছবির ফ্রেমে থাকেন, তাঁরা নিজেদের ইমেজ গড়তে, পেশার সৌজন্য নিয়ে ব্যস্ত। দিদির পাশে ছবি দিয়ে গুরুত্ব বাড়ান, কিন্তু মমতাদির বায়োপিক বা তৃণমূলের পক্ষে বার্তা যেতে পারে, এমন কোনও সিনেমার কথা তাঁরা ভাবেন না।’রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, ‘দ্য ডায়েরি অফ বেঙ্গল’-কে সামনে তুলে ধরা হলেও সামগ্রিক ভাবে আরজি কর ইস্যুতে টলিউডের ভূমিকায় খুশি নয় তৃণমূলের একাংশ। সম্প্রতি টলিউডের শিল্পী কলাকুশীলবরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে আরজি করের ঘটনার বিচার চেয়ে মিছিল করেছেন। যদিও সেখান থেকে রাজনৈতিক স্লোগান ওঠেনি।চিত্র পরিচালক অরিন্দম শীলের ব্যাখ্যা, তৃণমূল কংগ্রেসও কখনও চাইবে না বাংলায় কোনও ধরনের প্রোপাগান্ডার সিনেমা তৈরি হোক। তিনি বলেন, ‘আমি কুণালদাকে অনেকদিন চিনি। ওঁর পোস্ট দেখেছি। মনে হয়, উনি যা বলতে চেয়েছেন, তার অন্তর্নিহিত অর্থ আছে। পশ্চিমবঙ্গে প্রোপাগান্ডা ছবি হয় না। আমার মনে হয়, তৃণমূল কংগ্রেসও সেটা কোনওদিন চাইবে না। তা ছাড়া এরকম প্রস্তাবও আমরা কখনও পাইনি।’ চিত্র পরিচালক-অভিনেতা কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘কোনও রাজনৈতিক দলের প্রচারের জন্য ছবি বানাতে চাই না। তাঁরাই বানাক, যাঁরা রাজনৈতিক দলের সুবিধা পান।’ অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষের কথায়, ‘শিল্পীরা আরজি করের ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ করছেন। সেটা তৃণমূলের সহ্য হচ্ছে না।’আরজি কর ইস্যুতে ক্রমশ চাপ বাড়ছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের উপর। সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে তৃণমূল বিরোধী প্রচার। সাধারণ মানুষ পথে নেমেছে। আক্রমণ চালাচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও। এই অবস্থায় জোড়াফুল শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্বও চাইছেন, টলিউডের তারকারাও বিরোধীদের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে মুখ খুলুক। কিন্তু এখনও সেরকম কিছু চোখে পড়েনি তাঁদের। রাজনৈতিক মহলের মতে, সে কারণেই কুণাল এ দিন টলিউডের একাংশকে খোঁচা দিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘সামনে থেকে মানুষকে বোঝানোর কাজে এঁদের পাওয়া যায় না। দল না বললে কর্মসূচি, টুইটেও পাওয়া যায় না।’ তাঁর প্রশ্ন, ‘এই যে বাংলাকে আক্রমণ করে কুৎসিত ছবি আসছে, দেশ-বিদেশে বাংলার ইমেজ খারাপ করার চক্রান্ত, এঁরা জানেন না?’ এরপরই প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদের স্পষ্ট বার্তা, ‘এঁরা তার পাল্টা কিছু করবেন না, করতে চাইবেন না। এঁদের কেউ কেউ আন্তরিক। বাকি ক্ষমতাশালীদের নিয়ে দল ভাবুক।’ তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ হয়েও দলের প্রয়োজনে নিষ্ক্রিয় থাকা এই টলিউড তারকাদের উদ্দেশে কুণালের নিশানা, ‘এঁরা অনেকেই বড় নাম হতে পারেন। কিন্তু অনেকেই দলের বোঝা।’কুণালের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূল বিধায়ক তথা অভিনেত্রী লাভলি মৈত্রর প্রতিক্রিয়া, ‘উনি যা বলেছেন, সেটা ওঁর ব্যক্তিগত মত। দল জানে আমি কী কী করি। এর বাইরে আমি কিছু বলব না।’ চিত্রপরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘আমি তো ২০০১ সালেই ‘প্রতিবাদ’ নামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে সিনেমা করেছি। পরবর্তীতে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম নিয়েও একাধিক সিনেমা করেছি।’তৃণমূলের একাংশের প্রশ্ন, যদি কোনও সিনেমা ভুল তথ্য প্রচার করে অথবা হিংসায় উস্কানি দেয়, সে ক্ষেত্রে কি আদালতের ছবিমুক্তির বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়? টলিউডের একাংশের মতে, কোনও ছবি সেন্সর বোর্ড থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পরেই প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। যদি আপত্তিকর কিছু থাকে তা হলে সেন্সর বোর্ড-ই ছাড়পত্র দেয় না। এ প্রসঙ্গে হরনাথ বলেন, ‘সাধারণত আপত্তিকর কিছু থাকলে সেন্সর বোর্ডেই আটকে যায়। তবে যে সিনেমাটি নিয়ে বিতর্ক বেঁধেছে, সেটা আমি এখনও দেখিনি। ফলে এখনই কিছু বলা মুশকিল।’


from Bengali News, বাংলা নিউজ, বাংলায় সর্বশেষ খবর, Live Bengali News, Bangla News, Ajker Bengali Khabar - Eisamay https://ift.tt/uUeQT6g
Previous article
Next article

Leave Comments

Post a Comment

ads

Articles Ads 1

ads

Advertisement Ads