গলায় আটকে থাকা ভেটকির কাঁটা ১৬ দিন পর বেরোল এসএসকেএমে https://ift.tt/7eN0vRW - MAS News bengali

গলায় আটকে থাকা ভেটকির কাঁটা ১৬ দিন পর বেরোল এসএসকেএমে https://ift.tt/7eN0vRW

এই সময়: গলায় আটকে গিয়েছিল ভেটকি মাছের কাঁটা। টানা ১৬ দিন সেই কাঁটা আটকে থেকে ক্ষতবিক্ষত করছিল প্রৌঢ়ার গলাকে। অন্তত ৩ ইঞ্চি লম্বা সেই কাঁটাটি খাদ্যনালী ভেদ করে গলার মাংসপেশিতে বিঁধে আটকেছিল। ফুলে ঢোল হয়ে যাওয়া সেই গলার কারণে নাড়ানো যাচ্ছিল না মাথাও। অতি গুরুত্বপূর্ণ ধমনি ও স্নায়ুকে বাঁচিয়ে এবং বাকশক্তি যাতে অটুট থাকে, সেটা নিশ্চিত করে জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সেই কাঁটা বার করা ছিল বাস্তবিকই বেশ কঠিন। তবে সেই কাজটাই মঙ্গলবার নিপুণ দক্ষতায় করল এসএসকেএম। হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের চিকিৎসকদের দক্ষতায় আপাতত ভালো আছেন বছর সাতান্নর রোকেয়া বিবি। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, সব ঠিকঠাক থাকলে দিন কয়েকের মধ্যেই ছেড়ে দেওয়া হতে পারে বসিরহাটের রোকেয়াকে।ঘটনার সূত্রপাত গত ২৯ অক্টোবর। ভাত খেতে বসে ভেটকি মাছের একটি বড় টুকরো গোটাটাই মুখে নিয়েছিলেন ওই প্রৌঢ়া। মাছ চিবিয়ে কাঁটগুলো ফেলে দিলেও তিনি বোঝেননি যে, গলায় চলে গিয়েছে একটি বড়সড় কাঁটা। প্রথমে তেমন কোনও অসুবিধে না-হওয়ায় এটাও বোঝা যায়নি যে, কাঁটাটি গেঁথে গিয়েছে খাদ্যনালীর উপরের অংশে। প্রথম দিকে হালকা গলা ব্যথা হলেও তাতে রোকেয়া গুরুত্ব দেননি। কিন্তু দিন কয়েক পর সেই ব্যথাই প্রবল আকার ধারণ করে। এক সময়ে ফুলে যাওয়া গলায় এমন যন্ত্রণা শুরু হয় যে, ঘাড়-মাথা আর নাড়াতেই পারছিলেন না প্রৌঢ়া।ঘটনার ১২ দিন পরে, গত শুক্রবার ১০ নভেম্বর রোকেয়া যান তাঁর বাড়ির কাছে এক চিকিৎসকের চেম্বারে। ওই চিকিৎসক এক্স-রে করিয়ে বুঝতে পারেন, কী হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি রোকেয়াকে রেফার করেন হাসপাতালে। সেই মতো প্রৌঢ়া গত শনিবার এসএসকেএমে আসেন। ইএনটি বিভাগের চিকিৎসকরা ভালো করে পরীক্ষা করে দেখেন, কাঁটাটি খাদ্যনালী ফুটো করে গলার পেশিতে গেঁথে রয়েছে। সেখানে অনেকটা পুঁজ জমে সংক্রমণ হয়েছিল। গলা ফুলে ঢোল হয়ে গিয়েছিল। মাথা নাড়াতে পারছিলেন না ওই রোগিণী। ওই অবস্থায় অস্ত্রোপ্রচার করা ঝুঁকির ছিল। সে জন্য আগে সংক্রমণ কমানোর চেষ্টা করা হয়। দেওয়া হয় অ্যান্টিবায়োটিক। জমে থাকা পুঁজও বার করেন চিকিৎসকরা। তিন দিনের মাথায় ফোলা, ব্যথা ও সংক্রমণ অনেকটা কমে। সোমবার সিটি স্ক্যান করে দেখা যায়, মাছের কাঁটাটি তখনও গেঁথে রয়েছে। তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, মঙ্গলবার অস্ত্রোপ্রচার হবে। অর্থোপেডিক বিভাগ থেকে সি-আর্ম মেশিন নিয়ে তার সাহায্যে 'লাইভ' এক্স-রে করতে করতে কাঁটা ও ক্ষতের সঠিক জায়গা বুঝে অপারেশন করা হয়। ইএনটি বিভাগের প্রধান দেবাশিস বর্মন ও বিভাগীয় অধ্যাপক অরুণাভ সেনগুপ্তের তত্ত্বাবধানে হওয়া সেই অস্ত্রোপচারে অবশেষে বের হয় কাঁটাটি। অপারেশন টিমে ছিলেন ইএনটি-র সায়ন হাজরা, সৌত্রিক কুমার, সৌরভময় বন্দ্যোপাধ্যায় ও তপোজিৎ দাসের পাশাপাশি অ্যানাস্থেটিস্ট সন্দীপ বাবু। এসএসকেএমের তরফে বুধবার জানানো হয়, রোগী এখন সম্পূর্ণ বিপন্মুক্ত। সরাসরি মুখ দিয়েই খাওয়ানো হচ্ছে তাঁকে। দু'-এক দিনের মধ্যে ছুটিও দেওয়া হবে। চিকিৎসক সায়ন হাজরা বলেন, 'খাদ্যনালীতে কাঁটাটি গেঁথে থাকায় রোগিণী এতদিন কিছুটা ঠিক ছিলেন। কাঁটাটি শ্বাসনালীতে আটকে থাকলে প্রাণসংশয় অনিবার্য ছিল।' তিনি জানান, অস্ত্রোপচার করাও ছিল যথেষ্ট ঝুঁকির। কারণ খাদ্যনালীর যে জায়গায় কাঁটাটি আটকে ছিল, তার আশেপাশেই ছিল একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নার্ভ, মস্তিকে রক্ত বহনকারী ক্যারোটিড ধমনি। সেগুলোকে বাঁচিয়ে অপারেশনটি হয়েছে বলেই রোকেয়া দ্রুত সেরে উঠছেন।


from Bangla News, বাংলা খবর, Bengali News, বাংলা সংবাদ, Bengali Breaking News, Latest Bengali News, বাংলা নিউজ https://ift.tt/z0WhLHI
Previous article
Next article

Leave Comments

Post a Comment

ads

Articles Ads 1

ads

Advertisement Ads