বযলট বকস নবজয়র? বলব বল https://ift.tt/Gj2Pzra - MAS News bengali

বযলট বকস নবজয়র? বলব বল https://ift.tt/Gj2Pzra

এই সময়: সুষ্ঠু ও অবাধ পঞ্চায়েত ভোট করতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেনাপতিত্বে তৃণমূল এবার প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়া খোলনলচে বদল করেছিল। গা-জোয়ারি করে ভোট রুখতে ত্রিস্তরেই বহু ক্ষমতাসীন পঞ্চায়েত প্রধানকে টিকিট না দিয়ে নতুন মুখকে ভোটের ময়দানে নিয়ে এসেছে রাজ্যের শাসক দল। টিকিট দেওয়া হয়েছে নিচুতলায় স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে এমন লোকেদের। জেলায় জেলায় নবজোয়ার যাত্রা কর্মসূচি নিয়ে প্রার্থী বাছাই করতে গোপন ব্যালটে মানুষের মতামতও গ্রহণ করা হয়েছে। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শ নিয়ে অভিষেকের এই উদ্যোগের পরেও শনিবার পঞ্চায়েত ভোটে কিছু জায়গায় অশান্তি হয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের পর্যবেক্ষণ, এবারের ভোট পাঁচ বছর আগের তুলনায় অনেকটাই বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়েছে। ২০১৮-এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে একতরফা ভোট হয়েছিল, এবার যে তার পুনরাবৃত্তি হয়নি, তা বিরোধীপক্ষও পুরোপুরি অস্বীকার করতে পারেনি। এই পরিস্থিতিতে আজ, মঙ্গলবার পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফল বলে দেবে, অভিষেকের নেতৃত্বে তৃণমূলের প্রার্থী বাছাইয়ের অভিনব পন্থা কতটা সফল হলো? গোপন ব্যালটে সাধারণ মানুষ ও দলের কর্মীদের মতামত নিয়ে জোড়াফুল যাঁদের প্রার্থী করেছিল, তাঁরা সার্বিক ভাবে জনতার সমর্থন পেলেন কি না তা-ও এ দিন স্পষ্ট হয়ে যাবে। আজ, মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে গণনা শুরু হলেও ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতে সমস্ত আসনের ফল আসতে গভীর রাত হয়ে যেতে পারে। এমনকী, রাত পেরিয়ে কাল, কোথাও কোথাও গণনা শেষ হতে বুধবার সকাল হয়ে যেতে পারে। তাই জনতার রায় কাদের দিকে যাচ্ছে, আজ রাতের মধ্যে তা অনেকটা স্পষ্ট হয়ে গেলও সার্বিক চিত্র পরিষ্কার হবে আগামীকাল।তৃণমূল নেতৃত্বের দৃঢ় বিশ্বাস, অভিষেকের এই উদ্যোগ মানুষের রায়ে সিলমোহর পাবে। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেনের কথায়, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েকে মাথার উপরে রেখে দু'মাস জনসংযোগ করে মানুষের মতামত নিয়ে প্রার্থী বাছাই করেছেন। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তৃণমূল সহনশীল মনোভাব দেখিয়েছে। মানুষ তৃণমূলের এই উদ্যোগ দেখেছে এবং জনতার সমর্থন পেয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে জেলা পরিষদ--সর্বত্রই তৃণমূল জয়ী হবে।' রাজ্যে গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন ৬৩২২৯, পঞ্চায়েতে সমিতিতে ৯৭৩৯, জেলা পরিষদে ৯২৮। জেলা পরিষদে যাদের প্রাধান্য থাকবে, সার্বিক ভাবে গ্রামবাংলার জনতার সমর্থন সেই দলের দিকেই রয়েছে বলে রাজনৈতিক দলগুলি মনে করে। অন্যদিকে, গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরের ফল ইঙ্গিত দেয়, নিচু তলায় বুথ স্তরে কোন দলের দাপুটে সংগঠন রয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্ব এই সমস্ত মাপকাঠিতেই আজ জয়ী হওয়ার বিষয়ে দৃঢ়প্রত্যয়ী। যদিও প্রতীক না পেয়ে যেখানে তৃণমূলের একাংশ নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েছেন, সেখানে জোড়াফুলের অফিসিয়াল প্রার্থীরা পুরনো দুঁদে নেতাদের সঙ্গে কতটা এঁটে উঠলেন--সেই দিকেও শাসক দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের নজর থাকবে।পাশাপাশি ২০২৪-এর ভোটের আগে পঞ্চায়েতের রেজাল্ট আরও বেশ কয়েকটি বিষয়েও ইঙ্গিত দিতে পারে। যেমন, ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে বিজেপি প্রায় ৩৮ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। বামেদের ভোটব্যাঙ্ক থেকে একটা বড় অংশ বেরিয়ে তা গেরুয়া শিবিরের ঝুলিতে গিয়েছিল বলে সেই সময়ে তৃণমূলের অভিযোগ ছিল। এবার নিচুতলায় সেই ভোটব্যাঙ্ক বিজেপি কতখানি ধরে রাখতে পারল, অথবা রাজ্যের কয়েকটি জায়গায় বামেরা ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বলে যে দাবি করছে, সেই ভোট কিছুটা ফিরিয়ে তারা বাড়তি অক্সিজেন পেল কি না--সেদিকেও নজর থাকছে সব পক্ষের।পঞ্চায়েত ভোটের রেজাল্টের আগের দিন দলের পারফরম্যান্স কেমন হতে পারে, তা নিয়ে বঙ্গ-বিজেপি নেতৃত্বের মধ্যেই বিভ্রান্তি আছে। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী যেমন সন্ত্রাসের যুক্তি দেখিয়ে ভোটের ফলাফল নিয়ে আগাম মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর কথায়, 'রাজ্যের প্রায় ৬১ হাজার বুথের মধ্যে ১৮-২০ হাজার বুথ হয় পুরোপুরি, নয় আংশিক লুট হয়েছে। অন্তত ১০ হাজার বুথ পুরোপুরি লুট হয়েছে।' আবার বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষের কথায়, '১০-১২ শতাংশ জায়গায় আমরা ভোট করাতে পারিনি। তবুও উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ মিলিয়ে কয়েকটি জেলা পরিষদে আমরা জয়ী হব।' এনিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, 'শুভেন্দুর সঙ্গে আদি বিজেপি, আরএসএস-বিজেপি কেউই নেই। সর্বত্র পরাজয় নিশ্চিত বুঝেই এসব কথা বলছে ওরা।'শনিবার ভোটের পরে বাম নেতৃত্ব দাবি করেছিলেন, অনেক জায়গায় মানুষ লুটের চেষ্টা প্রতিহত করে ভোট দিয়েছেন। এমনকী, বাদুড়িয়ায় একটি বুথে সিপিএমই ছাপ্পা দিয়েছে বলে ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে (ভিডিয়োর সত্যতা 'এই সময়' যাচাই করেনি)। বাস্তবে বাম শিবির গত বিধানসভায় পাওয়া সাড়ে ৫ শতাংশ ভোট আদৌ কতখানি বাড়িয়ে নিতে পারল, সেটাও দেখার। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এদিন সাংবাদিক বৈঠকে অবশ্য সম্ভাব্য ফল নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শমীক লাহিড়ির কথায়, '২০১৮ সালের তুলনায় এবার ভালো ফল হওয়ার কথা। কিন্তু তা আঁচ করে শাসক দল এদিন রাতেই বহু জায়গায় কাউন্টিং এজেন্টদের তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।' সিপিএম তবু প্রতিরোধের মধ্যে আশার আলো দেখলেও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কথায় কিন্তু আশার সুর নেই। তাঁর অভিযোগ, ভোটের নামে ছেলেখেলা হয়েছে। মালদা, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুরে সংখ্যালঘু প্রধান পুরোনো ঘাঁটিতে কংগ্রেস আদৌ জমি ফেরাতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।আবার ২০২১-এর বিধানসভার মতো এবারও নওশাদ সিদ্দিকির আইএসএফের সঙ্গে জোট বেঁধেই পঞ্চায়েতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে বামেরা। এবার শুধু ভাঙড় নয়, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেশ কয়েকটি জায়গাতেও আইএসএফ প্রার্থী দিয়েছে। বিধানসভায় আইএসএফের হয়ে নওশাদ সিদ্দিকি ভাঙড় থেকে জিতলেও বামেরা খাতা খুলতে পারেনি। এবার আইএসএফের নিজস্ব ভোট আরও কিছুটা বাড়বে বা তাদের হাত ধরে হারানো সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক কি খানিকটা ফিরবে বামেদের দিকে, নাকি সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায় তৃণমূলের উপরই আস্থা রাখবেন, নজর থাকবে--সে দিকেও।


from Bengali News, আজকের বাংলা খবর, News in Bangla, Bengali News Live Today, বাংলা সংবাদ https://ift.tt/GYP9vXu
Previous article
Next article

Leave Comments

Post a Comment

ads

Articles Ads 1

ads

Advertisement Ads