চাঁদ মামার বাগানেও ফলবে কি ফসল https://ift.tt/6oQkjuM - MAS News bengali

চাঁদ মামার বাগানেও ফলবে কি ফসল https://ift.tt/6oQkjuM

এই সময়: ২০১৫ সালের ছবি ''-এ দেখানো হয়েছিল, নাসার এক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন মহাকাশ অভিযাত্রীর কথা। যিনি আটকে পড়েছিলেন মঙ্গল অভিযানে গিয়ে। একা সেই মানববিচ্ছিন্ন গ্রহে বেঁচে থাকার তাগিদে তিনি নিজের মহাকাশ যানের ভিতরেই ফলিয়েছিলেন আলু। ব্যবহার করেছিলেন মঙ্গলের মাটি। তাতে সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল অন্যান্য অভিযাত্রীদের বর্জ্য। এই অভিযাত্রীরা আগেই পালাতে পেরেছিলেন। কিন্তু এতকিছুর পরেও একা ওই অভিযাত্রীর যাবতীয় প্রচেষ্টায় বাধ সেধেছিল জল। মঙ্গলে আর জল কোথায়! তাই সেই অভিযাত্রীই হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেনকে কাজে লাগিয়ে গবেষণাগারে তৈরি করেছিলেন জলের উৎস। বহু সাধ্যসাধনার পর একদিন দেখতে পান, ভিনগ্রহে ফলেছে কচি কচি আলুর চারা। আর সেই চারাগুলোই বড় হয়ে ফলিয়েছিল আলু। সেই আলু খেয়ে বেঁচে ছিলেন অভিযাত্রী। ফিল্ম বা সায়েন্স ফিকশনে ভিনগ্রহে এমন ফসল ফলানোর উদাহরণ খুঁজলে আরও পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু বাস্তবের মাটিতে, থুড়ি চাঁদের মাটিতে কি ফসল ফলানো সম্ভব? এই মিশনই হাতে নিল অস্ট্রেলিয়ার একটি স্টার্টআপ কোম্পানি। যাদের লক্ষ্য ২০২৬ সালের মধ্যে চাঁদের মাটিতে ফসলের বীজ পৌঁছে দেওয়া। যাতে পৃথিবী ছাড়িয়ে প্রাণ বেড়ে ওঠে চাঁদ মামার বাগানে। এই প্রকল্পে ওই স্টার্টআপ কোম্পানি অস্ট্রেলিয়ার একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহায্য পাচ্ছে। সে দেশের সরকারও প্রায় ৩.৬ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে। কিন্তু এই অভিযানের পিছনে আরও একটি কারণ রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার একাধিক এলাকায় যেখানে চাষ হতো, সেখানকার ফলনের হার কমে গিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ান কনজারভেশন ফাউন্ডেশনের রিপোর্ট বলছে, সেখানকার মূল নদীর জলস্তর গত ২০ বছরে ৪০ শতাংশ কমে গিয়েছে। আসন্ন খাদ্য সঙ্কট যেন কড়া নাড়ছে ক্যাঙারুর দেশে। অস্ট্রেলিয়া তো বটেই, গোটা পৃথিবীতে ঊর্ধ্বগামী খাদ্য সঙ্কট কাটাতে এই অভিযান অত্যন্ত জরুরি হতে পারে বলে মনে করছেন সে দেশের বিশেষজ্ঞরা। তাহলে কি চাঁদের মাটিতে ফলা ফসল পৃথিবীর অভুক্তদের পেট ভরাবে আগামী দিনে? সেই সম্ভাবনা বাস্তবায়িত হতে অবশ্য খানিকটা দেরি আছে। প্রথমত, এখানকার কোন কোন ধরনের ফসল চাঁদের মাটিতে ফলতে পারে, সে তালিকা তৈরি করতে হবে। পৃথিবী থেকে চাঁদে যাওয়ার জন্য বিশেষ ধরনের একটি লুনার ল্যান্ডার বা চন্দ্রযানের প্রয়োজন পড়বে যেখানে বীজগুলি পৃথিবী ছাড়িয়ে মহাকাশ যাত্রায় সুরক্ষিত থাকতে পারে। ওই প্রজেক্টের অন্যতম বিজ্ঞানী ডক্টর গ্রাহাম ডরিংটনের কথায়, 'যে বিশেষ চন্দ্রযান বীজ বহনের জন্য তৈরি করা হচ্ছে, তার ওজন হতে হবে দেড় কেজির মধ্যে। এ ছাড়া বীজ বহনকারী চেম্বারগুলিকে মহাকাশের এক্সট্রিম ওয়েদার অর্থাৎ সর্বোচ্চ ৮০ ডিগ্রি ও সর্বনিম্ন মাইনাস ১৮০ ডিগ্রি তাপমাত্রার সঙ্গে যুঝতে হবে।' কিন্তু 'দ্য মার্শিয়ান' ছবিতে যা দেখা গিয়েছে, তা কি বাস্তবেও সম্ভব? চাঁদের আলু, চাঁদের গাজর অথবা চাঁদের টোম্যাটো কি শুধু সময়ের অপেক্ষা?ভারতীয় বিজ্ঞানী মহল সংশয়ী হলেও তা অসম্ভব বলে মনে করেন না। অ্যাস্ট্রোফিজিসিস্ট সোমক রায়চৌধুরী জানান, 'দ্য মার্শিয়ান' ছবিতে যে সব উপায়ে ফসল ফলানোর কথা বলা হয়েছে, তা থিওরিটিক্যালি সম্ভব। কিন্তু সোমকের বক্তব্য, 'এর আগে স্পেশ স্টেশন অথবা মহাকাশ যানে ফসল ফলেছে। কোনও গ্রহ বা উপগ্রহের মাটিকে ব্যবহার করে এখনও ফসল ফলানোর সাকসেসফুল উদাহরণ আমার জানা নেই।' একইসঙ্গে তিনি মনে করেন, যে ভাবে মানুষ গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে যাত্রার ছক কষছে, তাতে চাঁদ বা অন্যান্য গ্রহ কিংবা উপগ্রহকে অচিরেই খানিকটা 'বেস ক্যাম্প'-এর মতো ব্যবহার করতে হবে। যেখানে খাদ্য, জল, চিকিৎসা বা অন্য পরিকাঠামোর ব্যবস্থা থাকবে। যেমনটা দেখা যায় কোনও দুর্গম পাহাড়ি অভিযানের বেস ক্যাম্পে। যেখান থেকে অভিযাত্রীরা বের হন শৃঙ্গের উদ্দেশে। ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ফিজিক্সের প্রধান সন্দীপ চক্রবর্তীর বক্তব্য, 'চাঁদের যা আবহাওয়া এবং মাটির যা চরিত্র, তাতে মনে হয়, চাঁদের তুলনায় মঙ্গলই ফসল ফলানোর জন্য বেশি উপযুক্ত। কারণ পৃথিবীর সঙ্গে এর বায়োস্ফিয়ারের মিল অনেক বেশি।' তবে চাঁদে বরফের আকারে হলেও জলের উপস্থিতি আছে বলে জানান সন্দীপ। সেই কারণে তাঁর অভিমত, 'চাঁদে ম্যাগনেটিক ফিল্ড নেই। এক্স-রে ঠেকানো যায় না। রেডিয়েশন থেকে বাঁচিয়ে চাঁদের মাটির অনেক গভীরে যদি এই ফসল ফলানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়, তা হলে এর বাস্তবায়ন হলেও হতে পারে।' দুই বিজ্ঞানীই জানাচ্ছেন, এর জন্য বহুবিধ গবেষণা পৃথিবী জুড়েই চলছে। তবে চাঁদের গায়ে ফসলের ছোঁয়া পেতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করেই মতামত দেওয়া ভালো বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।


from Bengali News, আজকের বাংলা খবর, পঞ্চায়েত ভোট রেজাল্ট, News in Bangla, Bengali News Live Today, বাংলা সংবাদ https://ift.tt/aF3m0zS
Previous article
Next article

Leave Comments

Post a Comment

ads

Articles Ads 1

ads

Advertisement Ads