লতিফ দর্শনে প্রশ্নে সিবিআই, শনিবারও ডিউটিতে, এফআইয়ারে দাবি চালকের https://ift.tt/Sbey4Pp - MAS News bengali

লতিফ দর্শনে প্রশ্নে সিবিআই, শনিবারও ডিউটিতে, এফআইয়ারে দাবি চালকের https://ift.tt/Sbey4Pp

রূপক মজুমদার, বর্ধমানগোরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের চার্জশিট অনুযায়ী আব্দুল লতিফ পলাতক। অথচ তাঁর গাড়ির চালক বলছেন, তিনি পাঁচ বছর ধরে লতিফের গাড়ি চালাচ্ছেন। গত শনিবার, রাজেশ ঝা ওরফে রাজুর খুনের দিন সকালেও রোজকার মতো তিনি গাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন লতিফের বাড়িতে। কয়লা মাফিয়া রাজেশকে খুনের ঘটনার অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী, লতিফেরই ফরচুনার গাড়ির চালক শেখ নুর হোসেন শক্তিগড় থানায় দায়ের করা এফআইআরে এ কথা স্পষ্ট লিখেছেন। ঘটনার দিন এই ফরচুনারেই উঠেছিলেন রাজেশ। নুর পুলিশকে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন, রাজেশকে সেই রাতে বর্ধমানের অনাময় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর থেকেই আর খোঁজ নেই তাঁর মালিক লতিফের। গোরু পাচার মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত লতিফের গাড়ির চালকের এই বয়ানের পরেই গুরুতর প্রশ্ন উঠছে সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে। কেননা, বীরভূমের ইলামবাজারের গোরুর হাট থেকে বেআইনি ভাবে সীমান্ত পার করে গোরু পাচারের ক্ষেত্রে লতিফের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে তদন্তকারীরাই দাবি করেছেন। প্রশ্ন উঠছে, এই মামলার এত গুরুত্বপূর্ণ একজন অভিযুক্ত যদি ইলামবাজারের বাড়িতেই থাকেন, তা হলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তাঁকে এত দিন খুঁজে পেল না কেন? এখানেই শেষ নয়। রাজেশকে খুনের দিন একই গাড়িতে থাকা তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ব্রতীন মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেও লতিফের অন্তত গত তিন বছর ধরে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। শনিবার রাতে দুষ্কৃতীদের গুলিতে জখম হন ব্রতীনও। মোবাইলের কললিস্ট থেকে তদন্তকারীদের সন্দেহ, ব্রতীনের সঙ্গে লতিফের নিয়মিত মোবাইলে কথা হতো, ঘটনার দিনও হয়েছিল। তা হলে যে লতিফ এত দিন খাতায়কলমে ফেরার, তিনি বহাল তবিয়তে বাড়িতে রয়েছেন, ফোনে কথা বলছেন, এমনকী ব্যবসায়িক লেনদেনও চালাচ্ছেন, তিনি সিবিআইয়ের কাছে অধরা রইলেন কী ভাবে? এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে শক্তিগড়ের আমড়ায় রাজেশ খুনের অকুস্থলে লতিফের উপস্থিতির বিষয়ে জানার পর সিবিআই এ নিয়ে খোঁজখবর শুরু করেছে। সিবিআইয়ের একটি দল পূর্ব বর্ধমান জেলায় ঘুরে গিয়েছে। অনাময় হাসপাতালেও তদন্তকারীরা গিয়েছিলেন। যদিও এ নিয়ে তাঁরা বিস্তারিত কিছু জানাননি। নুরের এফআইআরের বয়ান অনুযায়ী, শনিবার বেলা দেড়টা নাগাদ তিনি ইলামবাজার থেকে লতিফকে তুলে দুর্গাপুরের উদ্দেশে রওনা দেন। মাঝপথে দুর্গাপুরের ভিরিঙ্গি মোড় থেকে গাড়িতে তোলেন ব্রতীনকে। তারপর তাঁরা দুর্গাপুর সিটি সেন্টারে ফরচুন হোটেলে পৌঁছন। সেখানে হোটেল মালিক রাজেশের সঙ্গে লতিফের কথাবার্তা হয়। সন্ধে ৬টা ১০ নাগাদ রাজেশ, লতিফ, ব্রতীনকে নিয়ে ফরচুনার গাড়িতেই কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন নুর। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, শক্তিগড় ল্যাংচাবাজারে একটি রেস্তরাঁর সামনে রাজেশের কথামতোই গাড়ি দাঁড় করানো হয়। সন্ধে ৭টা ৩৫ মিনিট নাগাদ রাজেশ বাদে বাকি তিন জন গাড়ি থেকে নেমে ঝালমুড়ি কিনতে যান। লতিফ ও ব্রতীন ঝালমুড়ি কিনে গাড়িতে উঠে পড়েন। ব্রতীন নুরকে একটি পানমশলার প্যাকেট কিনে আনতে বলেন। তিনি সেটি কিনতে যেতেই কিছুক্ষণের মধ্যে দেখেন, তিন অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী তাঁদের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালাচ্ছে। তদন্তকারীরা বোঝার চেষ্টা করছেন, লতিফ যদি সেই সময়ে গাড়িতেই থাকেন, তা হলে দুষ্কৃতীদের মুহুর্মুহূ গুলির একটিও তাঁর গায়ে লাগল না কেন? তা হলে কি তিনি গাড়ির বাইরে ছিলেন? না ঝালমুড়ি কিনে গাড়ি পর্যন্ত গিয়ে সরে পড়েছিলেন লতিফ? নুর পুলিশকে জানিয়েছেন, অনাময় হাসপাতালে যখন রাজেশকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা, তারপর থেকে তিনি আর দেখতে পাননি লতিফকে।তদন্তকারীরা মনে করছেন, লতিফের সম্পর্কে আরও জানতে ব্রতীনকেও দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন। দুর্গাপুরের হোটেলে লতিফের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা হয়েছিল রাজেশের। সেই সময়ে ব্রতীনও সেখানে ছিলেন। লতিফ ও রাজেশের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় বলেও তদন্তকারীদের কানে এসেছে। যদিও তার পর তাঁরা তিন জন একসঙ্গেই বেরিয়ে গাড়িতে ওঠেন। হোটেলে ঠিক কী বিষয়ে কথা হয়েছিল, কোনও ঝগড়া হয়ে থাকলে, সেটা কী নিয়ে, তার সঙ্গে রাজেশের খুনের ঘটনা পরম্পরার যোগ রয়েছে কি না, তা এই তদন্তে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে পুলিশ। যদিও ঘটনার রাতে ফরচুনার গাড়িতে লতিফের উপস্থিতি, গুলি চালানোর মুহূর্তের ঘটনা- এ সব সম্পর্কে জানতে সোমবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে বেরনোর সময়ে যখন বারবার প্রশ্ন করা হয় ব্রতীনকে। তিনি বলেন, 'আপনারা তো সবই জেনে গিয়েছেন, কারা ছিল। কেন আমার মুখ দিয়ে বলাতে চাইছেন? কেন আমার মুখ দিয়ে সব কথা বলাতে চাইছেন? আমার মন এমনিতেই ভালো নেই।'


from Bengali News, বাংলা খবর, Bangla News, Ajker Khobor, Latest Bengali News - Ei Samay https://ift.tt/R98YpGc
Previous article
Next article

Leave Comments

Post a Comment

ads

Articles Ads 1

ads

Advertisement Ads