বিপন্ন প্রজাতি বাঁচানোর লক্ষ্যে বঙ্গে ১০টি হেরিটেজ সাইটের ঘোষণা https://ift.tt/1geQOC4 - MAS News bengali

বিপন্ন প্রজাতি বাঁচানোর লক্ষ্যে বঙ্গে ১০টি হেরিটেজ সাইটের ঘোষণা https://ift.tt/1geQOC4

দেবাশিস দাশগুপ্ত ও অভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়আপনি কি গোল্ডেন মনিটর লিজ়ার্ড দেখেছেন, যার পুরো শরীরটাই সোনালি। কিংবা নদীর চরে কখনও রোদ পোহাতে দেখেছেন তৈলাক্ত মসৃণ শরীরের ভোঁদড়? কোথাও ঘুরে বেড়াতে দেখেছেন ব্ল্যাক সফ্ট শেল কচ্ছপকে? ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে এর জবাব আসবে ‘না’। কারণ এগুলো সবই আইইউসিএন (ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজ়ার্ভেশন অফ নেচার) এবং ভারতীয় বন্যপ্রাণ আইনে হয় বিপন্ন (এনডেঞ্জার্ড), নয় দারুণ ভাবে বিপন্ন (ক্রিটিক্যালি এনডেঞ্জার্ড)। সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বাঘ-সিংহ যদিও বা দেখা যাবে, প্রকৃতিতে মুক্ত অবস্থায় এদের দেখা মেলা দুষ্কর। অথচ জীববৈচিত্রের ভারমাস্য রক্ষায় এদের সংরক্ষণ অত্যন্ত জরুরি। বন দপ্তরের সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে সে কাজই করে চলেছে রাজ্য বায়োডাইভার্সিটি বোর্ড। ইতিমধ্যে জীববৈচিত্র রক্ষায় এ রাজ্যে ১০টি এলাকাকে বায়োডাইভার্সিটি হিসেবে ঘোষণা করেছে তারা। বোর্ডের দাবি, দেশে বায়োডাইভার্সিটি হেরিটেজ সাইটের সংখ্যায় পশ্চিমবঙ্গই আপাতত শীর্ষে।ভোঁদড় বা গোল্ডেন মনিটর লিজ়ার্ড ছাড়াও সহজে দেখা মিলবে না হিমালয়ান সালাম্যান্ডারের। দার্জিলিং হিমালয়ের মাত্র দু’তিনটি জলাশয়ে দেখতে পাওয়া যায় সেই জুরাসিক যুগ থেকে বিবর্তনের মধ্যে দিয়ে বেঁচে থাকা এই উভচর প্রাণীটিকে। তার মধ্যে কার্শিয়াং ব্লকের লাটপাঞ্চোরের নামথিং পোখরি (জলাশয়) এই মুহূর্তে সালাম্যান্ডারের আদর্শ আবাসভূমি।এই জায়গাটিকেও বায়োডাইভার্সিটি হেরিটেজ সাইট ঘোষণা করা হয়েছে। কিংবা বীরভূমের ইলামবাজারের পাশে কাঠের ফসিল পার্ক। এখানেও জুরাসিক যুগের গাছের ফসিল রয়েছে। হেরিটেজ সাইটের তালিকায় নাম তুলেছে সেই পার্কও। সম্প্রতি হেরিটেজ সাইটের তকমা পেয়েছে কাটোয়ার কাছে ভাগীরথীর বুকে জেগে ওঠা চর বালিডাঙা। কী আছে এই দ্বীপে? নদিয়ার কালীগঞ্জ ব্লকের অধীন ১১৫ একর এলাকার এই চরকে জীববৈচিত্রের আধার বলা যায়। ১০০ প্রজাতির মাইগ্রেটরি ও রেসিডেন্ট বার্ড ছাড়াও হাঁটু-উচ্চতার সবুজ ঘাসে ডুবে থাকা এই দ্বীপে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গোসাপ, ভোঁদড়, কচ্ছপ, সাপ, মংগুজ়, ফিশিং ক্যাট, সিভেট ক্যাট, গোল্ডেন জ্যাকেল। প্রাণীগুলোর প্রায় সবই বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইনে শিডিউল ওয়ানের অন্তর্ভুক্ত। এর সঙ্গে রয়েছে বিভিন্ন জলজ প্রাণী, পোকা, প্রজাপতি, গাছ, ঘাস, শ্যাওলা। নদিয়ার নয়াচরের বাসিন্দা, পরিবেশকর্মী গণেশ চৌধুরী বলেন, ‘ভাগীরথীর বুকে জেগে ওঠা প্রতিটি দ্বীপই জীববৈচিত্রে পূর্ণ। এগুলো প্রত্যেকটি হেরিটেজ হিসেবে ঘোষিত হওয়ার দাবি রাখতে পারে। চর বালিডাঙার হেরিটেজ তকমা খুব ভালো সিদ্ধান্ত।’বায়োডাইভার্সিটি হেরিটেজ সাইটে ট্যুরিস্ট গেলেও তা নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কাটা যাবে না কোনও গাছ। বসতি তো দূরের কথা, চাষাবাদও নিষিদ্ধ ওই এলাকায়। প্রশাসন চায়, স্বাভাবিক ভাবে বেড়ে উঠুক চর বালিডাঙার গাছপালা পশুপাখি। কালীগঞ্জ-এর বিডিও অঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘হেরিটেজ ঘোষণার পরেই এই দ্বীপে মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গাছ কাটা, মাটি কাটা, পশু শিকার যেন না হয়, তা নিশ্চিত করতে বিশেষ নজরদারি রাখা হচ্ছে। আমরা চাই, এই দ্বীপ জীববৈচিত্রে আরও সমৃদ্ধ হোক। প্রাকৃতিক ভাবে দ্বীপটির গাছপালা ও বসবাসকারী প্রাণীগুলো যাতে বংশবিস্তার করতে পারে, সে চেষ্টা করা হচ্ছে।’ আপাতত রাজ্যের ১০টি হেরিটেজ সাইট নিয়ে আশাবাদী বায়োডাইভার্সিটি বোর্ডের চেয়ারম্যান হিমাদ্রিশেখর দেবনাথ। তিনি বলছেন, ‘ফরেস্টে বন দপ্তরের নিজস্ব আইন রয়েছে। সেই আইনে সুরক্ষিত থাকে বন্যপ্রাণ ও জীববৈচিত্র। কিন্তু তার বাইরেও বহু এলাকা, জলাজমি রয়েছে, যেখানে জীববৈচিত্র ও প্রচুর সংখ্যায় বন্যপ্রাণ আছে। সেখানে বন দপ্তরের ভূমিকা নেই। অথচ ওই সব স্পিসিস খুবই বিপন্ন। তাদের রক্ষা করতেই বায়োডাইভার্সিটি অ্যাক্ট মেনে কাজ করছে বোর্ড।’ রবীন্দ্র সরোবর জাতীয় সরোবরের সংলগ্ন এলাকা জীববৈচিত্রে ভরপুর বলে জানিয়ে হিমাদ্রিশেখর বলেন, ‘আমরা রবীন্দ্র সরোবর লাগোয়া এলাকাকেও বায়োডাইভার্সিটি হেরিটেজ সাইট ঘোষণা করতে চাই। ওই এলাকাতেও বেশ কিছু স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি রয়েছে। হেরিটেজ সাইটের জন্য আমাদের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সরকার থেকে অনুমোদন পেলে ওখানেও আইন মেনে নির্দেশিকা জারি হবে।’


from Bengali News, বাংলা নিউজ, বাংলায় সর্বশেষ খবর, Live Bengali News, Bangla News, Ajker Bengali Khabar - Eisamay https://ift.tt/zeK0tmr
Previous article
Next article

Leave Comments

Post a Comment

ads

Articles Ads 1

ads

Advertisement Ads