আগুনে ছাই! হলং বাংলোর স্মৃতি টুকু থাকল, শুরু তদন্ত https://ift.tt/trM1y5D - MAS News bengali

আগুনে ছাই! হলং বাংলোর স্মৃতি টুকু থাকল, শুরু তদন্ত https://ift.tt/trM1y5D

এই সময়: সত্যসন্ধানী অর্জুনকে তাঁর স্রষ্টা সমরেশ মজুমদার বারবার ডুয়ার্সের বিভিন্ন জঙ্গলে নিয়ে গিয়েছেন অভিযানের জন্য। সেই সূত্রে অর্জুনের অ্যাডভেঞ্চার কাহিনিতে বার কয়েক অবধারিত ভাবে চলে এসেছে হলং বনবাংলোর কথা। দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে রুদ্ধশ্বাস অভিযানে হলং বাংলোর পরিবেশ তৈরি করত অন্য ধরনের রোমাঞ্চ। একা সমরেশ নন, বুদ্ধদেব গুহ এবং আরও কয়েক জন সাহিত্যিকের লেখায় ফিরে ফিরে এসেছে হলং বনবাংলোর মোহময় বর্ণনা। ওই বাংলোর প্রসঙ্গ উঠলেই স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়েন পর্যটকরা। রাজ্যের প্রাক্তন ও প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর পুজোর ছুটি কাটানোর জায়গা মানেই টানা বেশ কয়েক বছর ধরে ছিল জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের ভিতরে থাকা এই বাংলো। মঙ্গলবার রাত থেকে যা ইতিহাস। যা ধ্বংসস্তূপ। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পরিণাম। ডুয়ার্সে যখন ভরা বর্ষা, তখনই ঘটল এই ঘটনা!হলং বাংলো পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়ার কারণ খতিয়ে দেখতে বুধবার তদন্ত কমিটি গড়েছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। তদন্ত কমিটিতে থাকবেন মুখ্য বনপাল, সংশ্লিষ্ট ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার (ডিএফও) ও রেঞ্জ অফিসার-সহ বন দপ্তরের কয়েক জন আধিকারিক। ঐতিহ্যবাহী ওই বাংলোর পুড়ে যাওয়া নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বিভিন্ন মহলে। নিছকই দুর্ঘটনা, নাকি অন্তর্ঘাত— তা নিয়ে চর্চা তুঙ্গে। এত বেশি চর্চার কারণই হলো, হলং বাংলোর জনপ্রিয়তা ও সেখানে থাকার জন্য পর্যটকদের তীব্র আকর্ষণ।এ দিন বনমন্ত্রী বিরবাহা বলেন, ‘প্রাথমিক ভাবে আমাদের কাছে যে তথ্য এসেছে, তাতে শর্ট সার্কিটই আগুন লাগার কারণ বলে মনে হচ্ছে। তবে এই রকম ঐতিহাসিক বাংলো কী ভাবে পুড়ে ছাই হয়ে গেল, তার কারণ নিশ্চিত ভাবে ও অনুপুঙ্খ ভাবে আমরা জানতে চাই।’ মন্ত্রীর বক্তব্য, ‘পর্যটক না-থাকলেও সেখানে কর্মীরা ছিলেন। বাংলোর কাছাকাছি রেঞ্জ অফিসের কর্মীরাও ছিলেন। সবার সঙ্গে তদন্ত কমিটি কথা বলবে।’ উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল ভাস্কর জেভি জানিয়েছেন, আগুন লাগার সঠিক কারণ খুঁজে বার করা হবে।জলদাপাড়ার গভীর জঙ্গলে ৮ কামরার বাংলো, যার মূল কাঠামো কাঠের এবং যেখানে ব্রেকফাস্ট থেকে ডিনার, অর্ডার করলেই মেলে। আবার বাংলোর ঠিক বাইরে দাঁড়িয়ে বা ঘরে বসেই দেখা যায় গণ্ডার, হাতি, হরিণ ও পাখি। নামে বনবাংলো হলেও হলং বাংলো ছিল চারদিকে সবুজে সবুজ জঙ্গলের গহনে থাকা এক বিলাসবসহুল আস্তানা। সে জন্যই হলং বাংলোর গ্ল্যামার ছিল আলাদা। সে জন্যই অনলাইন বুকিং খোলার কয়েক সেকেন্ডে বুক্‌ড হয়ে যেত বাংলোয় পর্যটন উন্নয়ন নিগমের অধীনে থাকা ছ’টি ঘর-ই। আর বাংলোর বহিরঙ্গের সৌন্দর্য? ঠিক যেন পিকচার পোস্টকার্ড। ১৯৬৭ সালে তৈরি এই বনবাংলো ছিল রাজ্য বন দপ্তরের মহার্ঘ সম্পত্তিগুলোর অন্যতম। মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু থাকছেন বলে সাধারণ পর্যটকদের বুকিং ক্যানসেল্‌ড হয়েছে— এ রকম ঘটনা ঘটেছে একাধিক বার এবং তা নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি।নিয়ম মতো অন্য বনবাংলোগুলোর মতো হলং বাংলোও ১৫ জুন বন্ধ হয়ে যায় পর্যটকদের জন্য। শুধু বাংলো নয়, ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জঙ্গলেই পর্যটকদের প্রবেশ নিষেধ। বর্ষায় পর্যটকহীন বাংলোয় এসি, গিজ়ার চলার কথা নয়। তা হলে শর্ট সার্কিট হলো কী ভাবে? অন্তর্ঘাতের আশঙ্কা প্রকাশ করা কেউ কেউ দাবি করছেন, যে সময়ে আগুন ধরে, তখন বাংলো ও তার আশপাশ ঘিরে থাকা কর্মী ও অফিসারদের আবাসনে লোডশেডিং ছিল। তার পরেও কী ভাবে হলো শর্ট সার্কিট?২০১০ সালে ডুয়ার্সেরই বক্সা টাইগার রিজ়ার্ভের জয়ন্তী বনবাংলো আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। পরে সেখানে চার কামরার বিলাসবহুল বাংলো তৈরি হয়েছে। তবে সেখানে কাঠের বাংলোর বন্য সৌন্দর্য নেই বলে পর্যটক এবং বন দপ্তরের কর্তাদেরই একাংশের অভিযোগ। হলংয়ে কী হবে? বনমন্ত্রী বিরবাহা বলেন, ‘এখনই কিছু ঠিক হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে তাঁর পরামর্শ নিয়েই যা হওয়ার, সেটা হবে।’


from Bengali News, বাংলা নিউজ, Read Latest Bengali News, টি-২০ বিশ্বকাপ, Bangla News, Ajker Bangla Khabar - Eisamay https://ift.tt/4SMJ5Zt
Previous article
Next article

Leave Comments

Post a Comment

ads

Articles Ads 1

ads

Advertisement Ads