'বজরঙ্গি ভাইজান'-এর মুন্নির মতো ঘর ফিরে পেলেন গীতা https://ift.tt/35TGEG1 - MAS News bengali

'বজরঙ্গি ভাইজান'-এর মুন্নির মতো ঘর ফিরে পেলেন গীতা https://ift.tt/35TGEG1

পিয়ালী মিত্র পায়ে গভীর ক্ষত। অসংলগ্ন কথাবার্তা। মাস আটেক আগে যখন বছর ছত্রিশের গীতা সরকারকে উদ্ধার করেছিলেন ফুলবাগান থানার অফিসাররা, তখন নিজের নাম ছাড়া কিছুই বলতে পারেননি তিনি। তাঁকে তুলে দেওয়া হয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে। বাড়ির ঠিকানা? গীতা কখনও বলতেন বেঙ্গালুরু, কখনও শিলিগুড়ি, কখনও মুর্শিদাবাদ, এমনকী বাংলাদেশেরও নানা গ্রাম! যোগাযোগের বৃত্ত পুরো হলো শুক্রবার দুপুরে। ভিডিয়ো কলে মা-বাবাকে দেখে আবেগ ধরে রাখতে পারলেন না গীতা। বলে উঠলেন, 'মা গো, তোমাকে চিনতে পেরেছি। বাবা। তুমি কেমন আছ?' কিছু মানসিক সমস্যা এখনও রয়েছে গীতার। অসংলগ্ন কথা যায়নি পুরোপুরি। তবে ১৪ বছর আগে 'হারিয়ে যাওয়া' গীতার মা-বাবাকে চিনতে কোনও অসুবিধা হয়নি। চিনতে পেরেছেন বোন-ভগ্নিপতিকেও। আর এত বছর পর মেয়েকে খুঁজে পেয়ে যেন নিজেদের ভাগ্যকেই বিশ্বাস করতে পারছে না গীতার পরিবার! ২০০৬ সালে মালদার বামনগোলার বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন গীতা। পুলিশ সূত্রের খবর, গত মার্চ মাসে এলাকায় ইতস্তত ঘুরতে দেখে গীতাকে উদ্ধার করেন ফুলবাগান থানার অফিসারা। তিনি গোড়ায় পুলিশকে জানিয়েছিলেন, হাসপাতাল থেকে পালিয়ে এসেছেন। তাঁকে 'হোপ ফাউন্ডেশন'-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়। তখন থেকে তিনি রয়েছেন ওই সংস্থার হোমেই। পাভলভ হাসপাতালে তাঁর মানসিক চিকিৎসাও করানো হয়। সংস্থার প্রিন্সিপাল ভারতী আইচের কথায়, 'গীতার কথাবার্তা অসংলগ্ন থাকায় তাঁর বাড়ির ঠিকানা জানা মুশকিল হয়ে পড়েছিল।' তা হলে তাঁর ঠিকানা জানা গেল কী ভাবে? ভারতী জানান, যে জায়গাগুলোর কথা গীতা বলছিলেন, গুগল থেকে সেই জায়গাগুলির ছবি বের করা হয়। অনেকটা ''-এর মুন্নিকে তার বাড়ি খুঁজে দেওয়ার মতো ওইসব জায়গার বিভিন্ন স্কুল, মাঠ, মন্দিরের ছবি গীতাকে দেখানো হয়। ছবিগুলো বারবার দেখতে দেখতে একদিন মালদার বামনগোলা থানা এলাকার ছাতিয়ার একটি স্কুল দেখে গীতা জানান, ওই স্কুলে তিনি পড়তেন। ফলে ওই জায়গায় আরও কিছু ছবি জোগার করে গীতাকে দেখানো শুরু হয়। সেগুলি চিনতে পারেন গীতা। এর পরই ফুলবাগান থানার অফিসার দীপঙ্কর হালদার গীতার ছবি ও বিবরণ বামনগোলা থানাকে পাঠান। লাগাতার চেষ্টার পর বামনগোলার থানার পুলিশ জানতে পারে, ছাতিয়ার বাসিন্দা বলহরি মধুরের বড় মেয়ে অনেক বছর ধরে নিখোঁজ। গীতার ছবি দেখে নিজের মেয়ে বলে চিনতে পারেন বলহরি। গীতাকে মোবাইল স্ক্রিনের সামনে বসিয়ে ভিডিয়ো কল করা হয় তাঁর মা-বাবাকে। ১৪ বছরে স্মৃতি অনেকটা ধূসর হয়ে এলেও, মা-বাবাকে চিনতে অসুবিধা হয়নি তাঁর। নিউ টাউনে থাকেন গীতার বোন ও ভগ্নিপতি কল্পনা বালা ও গণেশ বালা। তাঁরা জানান, গীতার স্বামী তাঁর উপর নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন। স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না-পেরে পাঁচ বছরের মেয়ে ও তিন বছরের ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়িতে এসে ওঠেন গীতা। কিন্তু সেখানেও নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। তাই এক কৃষক পরিবারে কাজে ঢোকেন গীতা। প্রতিদিন খাওয়া-সহ ৩০ টাকা করে পেতেন। ২০০৬ সালের ২১ জুন সেই টাকা আনতে গিয়েই হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান। তিনি নিজেই কোথাও চলে গিয়েছিলেন নাকি তাঁকে পাচার করা হয়েছিল, তা এখনও জানা নেই কারও। গীতাও মনে করতে পারেন না সেই অতীত। তাঁর ছেলে-মেয়ে যে বড় গিয়েছে, তা এখনও বিশ্বাস হয়নি গীতার, করতে পারেন না গীতা। তবে এত দিন বাদে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, ফুলবাগান এবং মালদহের বামনগোলা থানার অফিসারদের চেষ্টায় নিজের পরিবারকে ফিরে পেয়ে উচ্ছ্বসিত তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহে গীতাকেই তাঁর মালদার বাড়িতে বাবা-মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে। এই সময় ডিজিটাল এখন টেলিগ্রামেও। সাবস্ক্রাইব করুন, থাকুন সবসময় আপডেটেড। -


from Bangla News: বেঙ্গলি খবর, Latest News in Bengali, Breaking News In Bengali, সর্বশেষ সংবাদ | Eisamay https://ift.tt/3lUeQa9
Previous article
Next article

Leave Comments

Post a Comment

ads

Articles Ads 1

ads

Advertisement Ads