জাতীয় সড়কে নিষিদ্ধ টোটো-ভ্যান, কিন্তু দেখছেই বা কে? https://ift.tt/ZfQz0n2 - MAS News bengali

জাতীয় সড়কে নিষিদ্ধ টোটো-ভ্যান, কিন্তু দেখছেই বা কে? https://ift.tt/ZfQz0n2

রূপক মজুমদার, বর্ধমানবর্ধমানের ঝিঙুটি মোড়ে ২বি জাতীয় সড়কে টোটো দুর্ঘটনায় পাঁচ জনের মৃত্যুর পর এক বছরও হয়নি। ফের জাতীয় সড়কে টোটো দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল সাত জনের। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, টোটো, ভ্যানো, সাইকেলের চলাচল বন্ধ করা না গেলে দুর্ঘটনায় রাশ টানা যাবে না। প্রশাসনের বক্তব্য, এসব একদিনেই বন্ধ করে দেওয়া যায় কিন্তু, বাধা রাজনৈতিক দলের নেতারা। তাঁদের হস্তক্ষেপেই বার বার পদক্ষেপ করতে গিয়েও পিছিয়ে আসতে হচ্ছে। ফলে চোখ চেয়ে দুর্ঘটনা দেখা ছাড়া গতি নেই প্রশাসনের। এমনিতে জাতীয় সড়কে টোটো, ভ্যানো, সাইকেলের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এমনকী চলার অনুমতি নেই মোটরবাইকেরও। সেখানে প্রতিদিন কয়েকশো টোটো অবাধে যাতায়াত করে জাতীয় সড়কে। বিশেষ করে বুদবুদ থেকে শক্তিগড়— এই এলাকায় জাতীয় সড়কে ধীর গতির যান চলাচলে কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকে না। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের নির্দেশিকায় এই পথে গাড়ি চলাচলের গতিবেগ ঘণ্টায় একশো কিমি। সেখানে টোটো, ভ্যানো চললে ছন্দপতন স্বাভাবিক। তাতে দুর্ঘটনাও অস্বাভাবিক নয়। পানাগড় থেকে পালসিট পর্যন্ত ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কে এনএইচআই অধিকর্তা মনীশ কুমার বলেন, ‘১০০-১২০ কিমি গতিবেগের রাস্তায় যদি ২০ থেকে ৩০ কিমি গতির গাড়ি যাতায়াত করে, তবে স্বাভাবিক ভাবেই দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। এ বিষয়ে আমরা জেলা প্রশাসনকে বহুবার চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। জাতীয় সড়কে টোটো, ভ্যানো, সাইকেলের চলাচল বন্ধ করতে হলে ব্যবস্থা নিতে হবে স্থানীয় প্রশাসনকেই। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।’২০২২-এর এপ্রিল মাসের ৪ তারিখ ভোরে টোটোয় খড়ি নদীতে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন পাঁচ জন। বর্ধমান থানার ঝিঙুটি মোড়ের কাছে ২বি জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল সেই পাঁচ জনের। ওই ঘটনার পরে তৎকালীন পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন জাতীয় সড়কে টোটো চলাচল বন্ধে পুলিশকে কড়া পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সাময়িক ভাবে পরিস্থিতির কিছুটা বদল ঘটলেও পরে পুরোনো মেজাজে ফিরে যায় জাতীয় সড়ক। তবে প্রাণহানির তোয়াক্কা করছেন না টোটোচালকরা। মঙ্গলবারও জাতীয় সড়কে যাত্রীবোঝাই টোটো চলতে দেখা গিয়েছে। তেমনই এক টোটোচালক অজিত দে বলেন, ‘ঝুঁকি আছে জেনেও রোজগারের জন্য যেতে বাধ্য হই। গাংপুর, পালসিট স্টেশনের বহু যাত্রী থাকেন। বন্ধ করতে হলে পুলিশ বন্ধ করুক। না করলে আমরা এভাবেই যাব। তাতে যা হওয়ার হবে। গরিব মানুষদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বেঁচে থাকতে হয়।’ জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, ‘স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতারা একটু সহযোগিতায় করলেই জাতীয় সড়কে টোটো অনায়াসে বন্ধ করে দেওয়া যায়। কিন্তু সকলেই ভোটের অঙ্ক কষতে ব্যস্ত। তাতে মানুষের জীবন গেলে যাবে।’পুরো ব্যাপারটা গা সওয়া হয়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বর্ধমানের উল্লাস মোড়ের বাসিন্দা সহদেব মোহন্ত বলেন, ‘একটি টোটোয় চালক সহ সাত-আট জন যাতায়াত করছে। সবাই তো দেখছে কিন্তু, কেউ কি কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে? ফলে দুর্ঘটনা ঘটছে।’বড়নীলপুরের বাসিন্দা দিলীপ সাহার বক্তব্য, ‘আমরা গাড়ি নিয়ে রাস্তায় গেলে লাইসেন্স, দূষণ, হাজার একটা কাগজের ঝক্কি সামলাতে হয়। আর ভ্যানো কালো ধোঁয়া ছেড়ে পুলিশের সামনে দিয়ে চলে যাচ্ছে। এর কি কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়? দূষণ কমাতে পুলিশ তখন নাকে রুমাল চাপা দেয়।’ জেলার পুলিশ সুপার আমনদীপ সিং বলেন, ‘এ বিষয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ জেলাশাসক বিধান রায় বলছেন, ‘আমরা কখনই চাই না দুর্ঘটনায় কেউ মারা যাক। জাতীয় সড়কে ধীরগতির যান চলাচল নিয়ে পুলিশ সুপারের সঙ্গে দ্রুত আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’


from Bengali News, Latest Bangla Sangbad, News in Bengali, বাংলা খবর - Ei Samay https://ift.tt/FmWEjRs
Previous article
Next article

Leave Comments

Post a Comment

ads

Articles Ads 1

ads

Advertisement Ads