কারচুপির কালিতে কি বাদ যোগ্যরা? কীর্তি অয়নের, দাবি ইডি-র https://ift.tt/YSmwHBi - MAS News bengali

কারচুপির কালিতে কি বাদ যোগ্যরা? কীর্তি অয়নের, দাবি ইডি-র https://ift.tt/YSmwHBi

এই সময়: কলমের অদৃশ্য আঁচড়ে 'যোগ্য' হয়ে যেতেন 'অযোগ্য'। কিংবা উল্টোটা। পুরোটাই টাকার বিনিময়ে। চাকরি দেওয়া-নেওয়ার এই উলটপুরাণের কাজটা অয়ন শীল নিজেই করতেন - তদন্তে এমনটাই জানা গিয়েছে বলে দাবি করল ইডি। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত প্রোমোটার অয়নের পর্দাফাঁস করতে গিয়ে শনিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে এই দাবি করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। পাশাপাশি তাদের দাবি, চাকরির পরীক্ষায় যোগ্য প্রার্থীরা ঠিক উত্তর দিলেও ওএমআর শিটে কলমের খোঁচায় তা নিজেই 'নষ্ট' করতেন অয়ন। আর যাঁরা টাকা দিতেন, তাঁদের ফাঁকা ওএমআরে ঠিক উত্তর বসানোর কাজটাও করতেন তিনি। ইডি জেনেছে, পুরসভায় কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে টাকার বিনিময়ে চাকরি কেনা প্রার্থীদের আবেদনপত্র বেমালুম বদলেই দিতেন অয়ন ও তাঁর কর্মীরা। এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হতো এক বিশেষ ধরনের রং। তবে বিষয়টি এখনই বিস্তারিত ভাবে জানাতে চাননি তদন্তকারীরা।১৩ দিন ইডি হেফাজতের পর এ দিন ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করা হয় অয়নকে। সওয়াল-জবাব চলাকালীন ইডির আইনজীবী ফিরোজ় এডুলজি দাবি করেন, গত ১৩ দিনে অয়নের ব্যাপারে আরও অনেক তথ্য তাঁদের হাতে এসেছে। একদিকে স্কুলে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ, অন্যদিকে পুরসভার কর্মী নিয়োগ - দু'বিষয়েই উঠে এসেছে দুর্নীতির প্রসঙ্গ।কী ভাবে দুর্নীতি করতেন অভিযুক্ত? ইডি-র দাবি, চাকরির পরীক্ষায় থাকে মাল্টিপল চয়েজ় কোয়েশ্চন (এমসিকিউ)। ওএমআরে এর যথাযথ জবাবে গোল দাগ দিতে হয় পরীক্ষার্থীদের। অর্থাৎ কোনও একটি প্রশ্নের উত্তর হিসেবে চারটি অপশন থাকলে ঠিক জবাবে গোল দাগ দিতে হয়। দেখা গিয়েছে, অনেক যোগ্য প্রার্থী ঠিক উত্তর দিলেও অয়ন ইচ্ছে করে তাঁদের ওএমআরে আরও একটি অপশনে দাগ মেরে দিতেন। ফলে কম্পিউটারে উত্তরপত্র পরীক্ষার সময়ে দু'টি অপশনে গোল দাগ দেখা যেত। ফলে সেই উত্তরের নম্বর বাদ দিয়ে দেওয়া হতো। এবং এ ভাবে নম্বর কমতে কমতে 'যোগ্য'রা হয়ে যেতেন 'অযোগ্য'। অন্যদিকে, অযোগ্যরা ফাঁকা খাতা জমা করলে ঠিক উত্তরে গোল দাগ দিয়ে ভরাট করতেন অয়ন বা তাঁর দলবল। খাতা দেখার সময়ে অযোগ্যরা তালিকার উপর দিকে উঠে যেতেন। জানা গিয়েছে, অয়ন এই কাজ শুরু করেন ২০১৪-১৫ সাল নাগাদ। যাঁদের জন্য তিনি এই কাজ করতেন, সেই অযোগ্য প্রার্থীরা ছিলেন মূলত প্রাথমিক টেটের পরীক্ষার্থী। এসএসসি এবং কিছু পুরসভার চাকরিপ্রার্থীও অবশ্য আছেন। এসএসসি-র ক্ষেত্রে অয়ন এজেন্ট হিসেবেও কাজ করতেন বলে দাবি ইডি-র। পাশাপাশি বদলে দেওয়া হতো পুর-নিয়োগের আবেদনপত্র। ইডি-র অনুমান, অয়নের সংস্থা যে সব পুরসভায় নিয়োগের দায়িত্ব পেয়েছিল, সেগুলিতে একটি চাকরিও স্বচ্ছ ভাবে হয়নি।এ দিন অয়নের কৌঁসুলিকে বিচারক শুভেন্দু সাহা প্রশ্ন করেন, 'নিয়োগে এবিএস ইনফোজ়োনের (অয়নের সংস্থা) দায়িত্ব ঠিক কতখানি ছিল?' সৌরভ জানান, পরীক্ষা নেওয়া থেকে খাতা দেখা এবং চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া পর্যন্ত পুরোটাই করত অয়নের সংস্থা। যে ওএমআরগুলো অয়নের অফিস ও বাড়ি থেকে পাওয়া গিয়েছে, তার সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতির যোগ নেই। টেন্ডার মারফত যেটুকু কাজ করতে বলা হয়েছিল, সেটুকুই করেছিল অয়নের সংস্থা। তিনি নিয়োগ কর্তা নন। আর উদ্ধার হওয়া ওএমআর সেই পরীক্ষার্থীদের, যাঁরা পরীক্ষা দিতেই যাননি। এতে দুর্নীতির কোনও ছাপ নেই বলে আয়নের কৌঁসুলির দাবি।যদিও ইডি এ সব যুক্তি মানতে নারাজ। তদন্তকারী সংস্থার খবর, অয়নের সঙ্গে অন্তত ১৫ জন প্রভাবশালীর যোগ ছিল। সেই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ধীরে ধীরে তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হবে। এ দিন আদালতে বিচারক ইডিকে দু'টি প্রশ্ন করেন। জানতে চান, ওএমআরের কার্বন কপি পাওয়া গিয়েছে কি না, এবং কোনও চাকরিপ্রার্থীকে এ পর্যন্ত ইডি জেরা করেছে কি না। জবাবে তদন্তকারী অফিসার বিজয় কুমার একান্তে বিচারকের সঙ্গে কথা বলেন। কেস ডায়েরি ও বাজেয়াপ্ত করা জিনিসপত্র, ওএমআর শিটের কপিও তাঁকে দেখান। বিচারকের প্রশ্ন, এই ওএমআরগুলোতে কি এসএসসি-র কিছু আছে? ইডি-র আইনজীবী এডুলজি জবাব দেন, যা উদ্ধার হয়েছে, তার বেশিরভাগই পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত। সব পক্ষের সওয়াল জবাব শুনে অয়নকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।


from Bengali News, বাংলা খবর, Bangla News, Ajker Khobor, Latest Bengali News - Ei Samay https://ift.tt/G2jAqNP
Previous article
Next article

Leave Comments

Post a Comment

ads

Articles Ads 1

ads

Advertisement Ads