আমি দুর্নীতিতে যুক্ত হলে বিশ্বে কেউই সৎ নয়! https://ift.tt/AUnz5f9 - MAS News bengali

আমি দুর্নীতিতে যুক্ত হলে বিশ্বে কেউই সৎ নয়! https://ift.tt/AUnz5f9

নয়াদিল্লি: বেলা ১১টায় আজ, রবিবার সিবিআই দপ্তরে হাজিরা দেওয়ার কথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের। দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় শুক্রবারই তাঁকে সমন পাঠিয়েছে সিবিআই। হাজিরা দেবেন, এটা জানিয়েই শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে সরব হলেন আম আদমি পার্টি (আপ)-এর প্রধান। জানিয়ে দিলেন, তিনি যদি দুর্নীতিগ্রস্ত হন, তা হলে বিশ্বে কেউ সৎ নয়। শুধু তাই নয়, আদালতে মিথ্যে তথ্যপ্রমাণ জমা দেওয়ার জন্য ইডি-সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করার হুঁশিয়ারিও দিয়ে রাখলেন আপ প্রধান। উল্টোদিকে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজুর প্রশ্ন, আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলে কেজরিওয়াল কি আদালতের বিরুদ্ধেও মামলা করবেন? সিবিআই সমন নিয়ে এই তরজার মধ্যে অ-বিজেপি শিবিরের সমর্থনও অবশ্য পেয়েছেন কেজরি। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের দাবি, কেজরিওয়ালের সঙ্গে কী হচ্ছে, সেটা লোকে দেখছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে ব্যবহারের এই প্রবণতা রুখতেই বিজেপির বিরুদ্ধে তাদের জোটবদ্ধ হয়ে লড়ার ভাবনা। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেও ফোন করে কেজরিওয়ালের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন।২০২১ সালে দিল্লিতে নয়া আবগারি নীতি চালু করেন কেজরিওয়াল। আপ-প্রশাসনের দাবি ছিল, এই নীতির ফলে রাজস্ব আদায় বাড়বে। কিন্তু বিজেপির অভিযোগ, মদ বিক্রিতে সমস্ত ধরনের সরকারি নিয়ন্ত্রণ তুলে নিয়ে বিশেষ কিছু মদ ব্যবসায়ীকে সুবিধা পাইয়ে দিতেই কেজরিওয়াল সরকারের এই নীতি। এর বিনিময়ে মদ ব্যবসায়ীদের থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়েছে কেজরিওয়াল সরকার আর তা ব্যবহার করেছে গোয়ার ভোটপ্রচারে। এই মামলার সূত্রে গত ফেব্রুয়ারিতে দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার পর থেকেই আপ দাবি করছিল, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার প্রধান লক্ষ্য কেজরিওয়াল। শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে কেজরিওয়াল বলেন, "বিজেপি যদি আমাকে গ্রেপ্তার করার ব্যাপারে সিবিআইকে নির্দেশ দেয়, তা হলে সিবিআই অবশ্যই তাদের নির্দেশ পালন করবে। তবে যিনি নিজে আপাদমস্তক দুর্নীতিতে ডুবে, তিনি কী ভাবে দুর্নীতির অভিযোগ তুলতে পারেন? মোদীজি আপনাকে বলি, যদি কেজরিওয়াল চোর বা দুর্নীতিগ্রস্ত হয়, তা হলে বিশ্বে একটাও সৎ মানুষ নেই!"কেজরিওয়ালের দাবি, আপ-ই একমাত্র দল, যারা দারিদ্র্য দূরীকরণ, সকলের জন্য শিক্ষা, চাকরির স্বপ্ন দেখিয়েছে, আর তাই বিজেপি এখন আপকেই নিশানা করছে। তাঁর কথায়, "তদন্তকারী সংস্থা দাবি করেছে, সিসোদিয়া নাকি ১৪টা ফোন নষ্ট করে দিয়েছেন, পুরোটা মিথ্যে। ওরা কোর্টে জমা দেওয়া হলফনামাতেও মিথ্যে বলছে। মিথ্যে জবানবন্দি লিখিয়ে নিতে সন্দেহভাজনদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে। হুমকি দেওয়া হচ্ছে— তোমার মেয়ে কাল কী করে কলেজ যায় দেখে নেব! এটা পুরোটা করা হচ্ছে আমাকে কব্জায় নেওয়ার জন্য..." কেজরির দাবি, যে আবগারি দুর্নীতির কথা বলা হচ্ছে, সেই নীতি পাঞ্জাবে চালু করেই রাজস্ব ৫০ শতাংশ বেড়েছে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, এত মাসের তদন্ত ও গ্রেপ্তারির পরও আবগারি দুর্নীতি মামলায় একটা হিসেববহির্ভূত পয়সাও উদ্ধার করতে পারেননি তদন্তকারীরা! কেজরির কথায়, "তল্লাশি করে যখন কিছু উদ্ধার হলো না, ওরা দাবি করল এই টাকা গোয়ার ভোটপ্রচারে ব্যবহার করা হয়েছে। তার প্রমাণ কোথায়? যে ১০০ কোটির দুর্নীতির কথা বলছেন, তার একটা টাকা আমাকে দেখান। আমি যদি কোনও প্রমাণ ছাড়া এখন দাবি করি, ১৭ সেপ্টেম্বর সন্ধে সাতটার সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এক হাজার কোটি টাকা দিয়েছি, তা হলে আপনারা মোদীকে গ্রেপ্তার করবেন তো?" , কোর্টে মিথ্যে দাবি ও তথ্যপ্রমাণ পেশের জন্য সিবিআই এবং ইডি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন তিনি। জবাবে সরব হয় গেরুয়া শিবির। বিজেপির অনুরাগ ঠাকুরের বক্তব্য, "মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালের দুর্নীতিগ্রস্ত মুখ সকলের সামনে চলে এসেছে। দুর্নীতিগ্রস্ত মন্ত্রী নিয়ে ক্যাবিনেট চালানো কেজরিওয়াল নিজেকে দেশের একমাত্র সৎ বলে দাবি করছেন! এতো চোরই উল্টে কোতোয়ালকে শাসায়!" বিজেপির মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া অবশ্য তার আগেই সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেছেন, হাতকড়া পরার দিনে এগিয়ে আসছে বুঝেই ভয়ে কাঁপছেন কেজরিওয়াল। তিনি নির্দোষ হলে লাই ডিটেক্টর টেস্ট করাচ্ছেন না কেন? কেজরিওয়াল অবশ্য শুধু সিবিআই-ইডি নিয়েই সরব হননি, তামিলনাড়ুতে বিল পাশ নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের যে দ্বৈরথ চলছে, তা নিয়ে স্ট্যালিনকে সমর্থন করে চিঠিও লিখেছেন কেজরি। তাঁর বক্তব্য, "ভারতের গণতন্ত্র প্রতিদিন বিধ্বস্ত হচ্ছে। সংবিধানের স্বাধীনতা, সমানাধিকার, ধর্মনিরপেক্ষতার মতো প্রতিটি বিষয় লঙ্ঘিত হচ্ছে।" দিল্লিতেও উপরাজ্যপালের অসহযোগিতার কথা স্মরণ করিয়ে কেজরিওয়ালের দাবি, অ-বিজেপি রাজ্যে সরকার এবং রাজ্যপাল, উপরাজ্যপালদের নীরব লড়াই চলছে, আর সেটা করাচ্ছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। । পাঞ্জাব ও গুজরাটে বিজেপিকে ভালোই চাপে ফেলেছে আপ। এই পরিস্থিতিতে ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে আপ বড়সড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে বুঝেই বিজেপি এই ভাবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ আপের। এ ব্যাপারে সরাসরি মুখ না খুললেও বিরোধী জোটের অন্যতম মুখ নীতীশ শনিবার দাবি করেন, বিজেপির এই নোংরা খেলার বিরুদ্ধে লড়তেই তাঁরা একজোট হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। কেজরিওয়ালের দলও নিজেদের মতো করে ঘুঁটি সাজাচ্ছে। সিবিআই সমনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য সোমবার দিল্লি বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে।


from Bengali News, বাংলা খবর, Bangla News, Ajker Khobor, Latest Bengali News - Ei Samay https://ift.tt/tFxdGW7

Leave Comments

Post a Comment

ads

Articles Ads 1

ads

Advertisement Ads