আদানিকাণ্ডে মোদীর অস্বস্তি বাড়ছে বই কমছে না https://ift.tt/oue0CjW - MAS News bengali

আদানিকাণ্ডে মোদীর অস্বস্তি বাড়ছে বই কমছে না https://ift.tt/oue0CjW

প্রশান্ত ভট্টাচার্য আদানি সংস্থা নিয়ে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই কার্যত ব্যাকফুটে মোদী সরকার। এবার সুপ্রিম কোর্টেও জোর ধাক্কা খেল। আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার দর ধসের জেরে অভূতপূর্ব কাণ্ডের তদন্তে কেন্দ্রের দেওয়া শর্ত খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালত। কেন্দ্রের দেওয়া সিল করা খাম গ্রহণ না করে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিল, এগুলো স্বচ্ছতার অভাবকেই স্পষ্ট করছে।এতদিনে সারা বিশ্ব জেনে গিয়েছে, ধনস্ফীতির আড়ালে আছে একটি বিশাল ধোঁকা। অনেক তেল ও জলের রসায়ন। মোদী-আদানি সমীকরণ। তাই মার্কিন ধনকুবের জর্জ সোরেস নরেন্দ্র মোদীকে জোর খোঁচা দিয়েছেন। জানা যাচ্ছে, জার্মানির মিউনিখে এক সম্মেলনে অংশ নিয়ে জর্জ সোরেস বলেন, 'আদানি ইস্যুত এখনও নীরব। কিন্তু তাঁকে জবাব দিতেই হবে। এই ঘটনা ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় মোদীর রাশকে দুর্বল করে দেবে।' হাঙ্গেরীয় বংশোদ্ভূত এই মার্কিন ধনকুবের মনে করেন, 'আদানি শিল্পগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শেয়ার বাজারে যে জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে এবং ভারতের সংসদে জবাবদিহি করতে হবে।’এরপরেই ওই ধনকুবের যে ফুটনোটটি দিয়েছেন, তা মারাত্মক। জর্জের আশা, এবার ভারতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরে আসবে। পাঠক বলে দেওয়া বাহুল্য হবে যে আন্তর্জাতিক আসরে তাঁর এমন মন্তব্য স্পষ্টতই ইঙ্গিত করে, তিনি বলতে চাইছেন ভারতে এই মুহূর্তে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নেই। আর এতেই ক্ষেপেছে গেরুয়া শিবির। নেমে পড়েছেন নন্দী-ভৃঙ্গীরা। কারো কারো অভিযোগ, বিদেশি চক্রান্তকারীরা ভারতের বিরুদ্ধে অলিখিত যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। ভারতের সম্মানকে 'মিট্টি মে মিলা' দেওয়ার কৌশল। কিন্তু মোদী অ্যান্ড কোম্পানির ব্যথা তো অন্য জায়গায়। আদানি সংকটের জেরে ভারতীয় লগ্নিকারীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, তা নিশ্চিত করতেই গত শনিবার বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়েছিল শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। যদিও এর আজ্ঞে সংসদের দুই কক্ষ মিলিয়ে ১৫৯ মিনিটের বক্তৃতায় 'বন্ধু' আদানি নিয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের গুঁতো খেয়ে সোমবারই কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট ডিভিশন বেঞ্চকে জানায়, তিনটি শর্ত সাপেক্ষে তারা বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়তে রাজি। ওইদিনই একটি মুখ বন্ধ খামে তাদের শর্ত সুপ্রিম কোর্টে জমা দেয়। শুক্রবার আদানিকাণ্ড নিয়ে মামলার শুনানিতে সেই তিন শর্ত খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের ডিভিশন বেঞ্চ ওই তিন শর্ত খারিজ করার কারণ হিসেবে জানিয়েছে, যেসব শর্তের কথা বলা হয়েছে, মামলার ক্ষেত্রে তা আরোপ হলে, তদন্তে স্বচ্ছতা বলে কিছু থাকবে না। এখন কথা হল কী ছিল সেই তিন শর্ত? জানা গিয়েছে, প্রথমটি হল,তদন্ত কমিটির বিচার্য বিষয় কী হবে, তা ঠিক করে দেবে কেন্দ্র। দ্বিতীয় শর্তটি হল, বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য কারা হবেন, তাও ঠিক করে দেবে মোদী সরকার। আর তৃতীয় শর্তটি আরও মজার, দেশের শেয়ার বাজার যারা রেগুলেট করে, সেই সেবি সম্পর্কে এমন কোনও বার্তা দেওয়া যাবে না, যার মাধ্যমে এটা স্পষ্ট হয় যে সেবি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। একেই বলে হরি নাম খাবলা খাবলা।মানে আমার যেমন বেণি তেমনি রবে চুল ভেজাব না। কেন্দ্রীয় সরকারের এই শর্তগুলো দেখলেই বোঝা যাচ্ছে, ডাল মে কুছ কালা হ্যায়, মোদী সাব সাফা নয়। প্রধান বিচারপতি, সরকারি আইনজীবীর মাধ্যমে কেন্দ্রকে নিশ্চিত করতে চেয়েছেন সেবি নিয়ে। তাঁর মন্তব্য, সেবির মান খর্ব হয় এমন কাজ আদালত করবে না। একইসঙ্গে তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন, আদানিকাণ্ডে কেন্দ্রীয় সরকার যে গোপনীয়তা রক্ষা করছে, তা বুমেরাং হতে পারে। কেননা, তা নিরঙ্কুশভাবে স্বচ্ছতার পরিপন্থী। শীর্ষ আদালতের এই পর্যবেক্ষণ ও শর্ত খারিজ করে দেওয়ার পরই বিরোধীরা সরব হয়েছেন। কংগ্রেসের জাতীয় মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বিবৃতি দিয়েছেন। ভাবটা এই ঝোলা থেকে বেড়াল বেরোল বলে। এখন বোঝা যাচ্ছে,সংসদে মোদী কেন আদানি বিষয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি। বিবিসির তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোয়েশ্চেন’ আর হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টকে কেন্দ্র করে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের পতন ঘিরে বিতর্ক চলছেই। এই জোড়া ফলায় কাছা আলগা অবস্থায় সুপ্রিম কোর্টের এই মনোভাব স্বস্তি দিচ্ছে না ৫৬ ইঞ্চিকে। টেলে কাউ ডাঙ হয়ে গিয়েছে বিজেপি। ফলে মোদীবাহিনীও নেমে পড়েছে পালটা ভূমিকায়। বিজেপি নেতারা তো আছেনই আবার পোঁ ধরেছেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়। অন্যদিকে, বিজেপির রিক্রুটমেন্ট অথরিটি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএস-ও নেমে পড়েছে। সংঘের মুখপত্র পাঞ্জজন্য অত্যন্ত ন্যক্কারজনক ভাবে শীর্ষ আদালতকে আক্রমণ করেছে। গত সোমবার পাঞ্চজন্যের সম্পাদকীয়তে বিবিসির তথ্যচিত্রের সমালোচনা করা হয়েছে। যদিও সেটা কোনও ব্যাপারই না, তথ্যচিত্রের সমালোচনা করা যেতেই পারে। কিন্তু ওই মুখপত্রের সম্পাদকীয়র লেখক হিতেশ কুমার প্রশ্ন তুলেছেন সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকা নিয়েও। ওই সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, 'সর্বোচ্চ আদালত ভারতের। দেশের করদাতার টাকায় চলে। এর কাজ (পড়ুন সুপ্রিম কোর্ট) ভারতীয় রীতিনীতি ও বিধি মেনেই হওয়া উচিত। সুপ্রিম কোর্ট ভারতীয়দের স্বার্থের জন্যই তৈরি হয়েছে। কিন্তু সেটা দেশবিরোধী শক্তির উদ্দেশ্যপূরণের অস্ত্র হিসেবে প্রয়োগ হচ্ছে।' আমার নিশ্চিত ধারণা, শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট আদানি ইস্যুতে তদন্তে মোদী সরকারের তিন শর্ত খারিজ করায় আরএসএস ও পদ্মশিবির থেকে আক্রমণের ধার আর তীক্ষ্ণ হবে। কেননা, মোদীই উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের প্রধান মসীহ, তিনিই যদি নড়বড়ে হয়ে পড়েন, তবে কে বিজেপি বাঁশি তে ফুঁ দেবে?


from Bengali News, বাংলা খবর, Bangla News, Ajker Khobor, Latest Bengali News - Ei Samay https://ift.tt/jrlEUhx

Leave Comments

Post a Comment

ads

Articles Ads 1

ads

Advertisement Ads