দু’সপ্তাহে প্যারালাইজ়ড হয়ে মৃত ৪টি গন্ডার শাবক https://ift.tt/MqTwVt7 - MAS News bengali

দু’সপ্তাহে প্যারালাইজ়ড হয়ে মৃত ৪টি গন্ডার শাবক https://ift.tt/MqTwVt7

পিনাকী চক্রবর্তী, আলিপুরদুয়ারনতুন বিপদ দেখা দিয়েছে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের একশৃঙ্গ গন্ডারদের সংসারে। গত দু’সপ্তাহে পর পর চারটি গন্ডার শাবকের (অসমর্থিত সূত্রের খবর, আসল সংখ্যা আরও বেশি) অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে জলদাপাড়ায়। দু’দিন আগেই জলাভূমিতে আটকে পড়া আরও একটি অসুস্থ গন্ডার শাবককে বাঁশের মাচায় করে উদ্ধার করেছে বন দপ্তর। সেটিকে খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণের পর ডিএফও প্রবীণ কাসোয়ান বলেন, ‘গন্ডার শাবকটি পক্ষাঘাতে আক্রান্ত। বাঁচার সম্ভাবনা খুবই কম। তবে আমরা চেষ্টা করছি।’বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, অসুস্থ গন্ডারটির মতো বাকি মৃত গন্ডারগুলির মধ্যেও একই ধরনের উপসর্গ দেখা দিয়েছিল। হঠাৎ করেই তাদের পিছনের পা দু’টি প্যারালাইজ়ড হয়ে পড়ে। প্রাথমিক ভাবে অসুস্থতা ও মৃত্যুর কারণ অ্যানথ্রাক্স বলে আশঙ্কা করা হলেও, মৃত গন্ডারগুলির দেহাংশের বিস্তারিত নমুনা পরীক্ষার পর সেই তত্ত্ব খারিজ করে দিয়েছে বেলগাছিয়া ল্যাবরেটরি। তবে তাতে নতুন আশঙ্কা মাথাচাড়া দিয়েছে। মৃতদেহগুলির ময়নাতদন্তে দেখা গিয়েছে, ওই গন্ডারগুলির অন্ত্রে জমা হয়েছিল প্রচুর পরিমাণে টেপ ওয়ার্ম (ফিতা কৃমি)। টেপ ওয়ার্মের কারণেই গন্ডাররা প্যারালাইজ়ড হয়ে পড়ছে কি না, সেটাই এখন গবেষণা করে বুঝতে চাইছেন বনকর্তা ও বন্যপ্রাণী চিকিৎসকরা। এই তথ্য সামনেই আসতেই উদ্বেগের পারদ চড়েছে জলদাপাড়ায়।এর আগে ২০১৮ সালে জলদাপাড়ায় পর পর ৬টি গন্ডারের মৃত্যুর পরে দেহাংশের পরীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, সেগুলি অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত। রাজ্যের তৎকালীন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সে তথ্য স্বীকারও করে নিয়েছিলেন। হালে ফের জলদাপাড়ায় একাধিক গন্ডারের রহস্যমৃত্যুর পরে আর ঝুঁকি নিতে চাননি বনকর্তারা।উত্তরবঙ্গের বন্যপ্রাণ শাখার বনপাল ভাস্কর জেভি বলেন, ‘২০১৮ সালের ঘটনা মাথায় রেখে আমরা মৃত গন্ডারগুলির দেহাংশের নমুনা বেলগাছিয়ার পরীক্ষাগারে পাঠিয়েছিলাম। পরীক্ষায় অ্যানথ্রাক্সের কোনও নমুনা মেলেনি। তবে কেন গন্ডার মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে, তা আমরা খতিয়ে দেখছি।’ বনকর্তারা আশঙ্কা করছেন, গৃহপালিত শুয়োরের মাধ্যমেই কোনও ভাবে টেপ ওয়ার্ম ছড়িয়ে পড়ছে গন্ডারদের দেহে।কারণ, বন সংলগ্ন লোকালয় থেকে গবাদি পশুর সঙ্গে শুয়োরের পাল প্রায়ই জঙ্গলে ঢুকে পড়ে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে জঙ্গল জুড়ে শুরু হয়েছে বিশেষ স্ক্রিনিং। খতিয়ে দেখা হচ্ছে, আর কোনও গন্ডারের এমন উপসর্গ আছে কি না।এখন এই সঙ্কটের মোকাবিলা করা হবে কোন পথে?জলদাপাড়ার বন্যপ্রাণী চিকিৎসক উৎপল শর্মা বলেন, ‘ঘটনাটা উদ্বেগজনক। মোকাবিলা করার পথও খুবই দুরূহ। কারণ কৃমিনাশক কোনও প্রতিষেধক এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি। আর ইনজেকশনও নেই। এই রোগমুক্তির একমাত্র পথ হলো গন্ডারদের কৃমির ওষুধ খাওয়ানো। যে কাজ শুধু কঠিনই নয়, এক কথায় প্রায় অসম্ভব। কারণ ওষুধ খাওয়াতে গেলেই গন্ডাররা কামড়াতে আসে। শক্ত চোয়াল হওয়ায় সে কামড় প্রাণঘাতীও হতে পারে।’ ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করে তিনি বলেন, ‘আমি নিজে অসুস্থ গন্ডার শাবককে ওষুধ খাওয়াতে গিয়ে প্রায় বিপদ ডেকে এনেছিলাম। কামড়ে আমার হাত ভেঙে দিতে পারত। কী ভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা যাবে, সে বিষয়ে আমার কিছু অভিজ্ঞতার কথা বিভাগীয় বনাধিকারিককে জানিয়েছি। দেখা যাক, কী হয়!’এ নিয়ে ন্যাফ মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, ‘অত্যন্ত উদ্বেগের খবর। ঠিক পথে সামাল দিতে না পারলে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।’


from Bengali News, বাংলা নিউজ, বাংলায় সর্বশেষ খবর, Live Bengali News, Bangla News, Ajker Bengali Khabar - Eisamay https://ift.tt/dGCJPmi
Previous article
Next article

Leave Comments

Post a Comment

ads

Articles Ads 1

ads

Advertisement Ads