মোদী জমানায় ১২২ ছাত্রছাত্রী আত্মঘাতী! উদ্বেগ সব মহলে https://ift.tt/3HrhOgP - MAS News bengali

মোদী জমানায় ১২২ ছাত্রছাত্রী আত্মঘাতী! উদ্বেগ সব মহলে https://ift.tt/3HrhOgP

এই সময়: আই কুইট! ২০০৯ সালে প্রকাশিত 'থ্রি ইডিয়টস'-এর সেই মুহূর্তটা। দেশের সেরা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের চাপ নিতে না-পেরে দেওয়ালে ওই দুটো শব্দ লিখে নিজেকে শেষ করে দিয়েছিল মেধাবী ছাত্র। তার পর কেটে গেছে গোটা একটা যুগ। সিনেমার মর্মান্তিক দৃশ্যটা এখন বাস্তব। খোদ কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের দেওয়া তথ্যই বলছে, গত সাত বছরে নিজেদের শেষ করে দিয়েছে দেশের ১২২টি মেধাবী তরতাজা প্রাণ। সংসদে একটি প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, IIT, NIT, IISER ও কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ২০১৪ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ১২২ জন পড়ুয়া আত্মঘাতী হয়েছেন। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জমানায় মৃত এই পড়ুয়াদের প্রায় ৫৬%, অর্থাৎ ৬৮ জনই তফসিলি জাতি-উপজাতি এবং অন্য অনগ্রসর জাতিভুক্ত। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, দেশের সেরা কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলির পড়ুয়াদেরই যদি এমন অবস্থার মুখোমুখি হতে হয়, তা হলে রাজ্য সরকারি প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়-সহ তুলনায় কম উৎকর্ষ ও প্রচারে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলির পড়ুয়াদের হাল কেমন? দেশের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়তে গিয়েও কেন পড়ুয়ারা আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে? সংসদে পেশ হওয়া এই পরিসংখ্যানের মধ্যে রাজ্যভিত্তিক তথ্য দেওয়া না হলেও শিক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতিষ্ঠানগুলির হিসেবও রয়েছে। কেন এমন ঘটনা ঘটছে? NIT দুর্গাপুরের অধিকর্তা অনুপম বসু জানাচ্ছেন, তাদের প্রতিষ্ঠানে গত পাঁচ বছরে ছাত্র-আত্মহত্যার কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবে একই সঙ্গে অনুপমের মূল্যায়ন, 'ছেলেবেলা থেকে ছাত্রছাত্রীদের অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতার মধ্যে আমরা ফেলে দিচ্ছি। অথচ জীবনে ব্যর্থ হলে কী করে মোকাবিলা করতে হবে তার কোনও শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে না।' একই সঙ্গে তিনি মনে করেন, 'জনজাতিভুক্ত ছাত্রছাত্রীদের অনেক সময়েই ভাষাগত সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। ইংরেজি না জানা থেকে খারাপ রেজাল্ট করা, অন্য বন্ধুদের সঙ্গে মানিয়ে না নেওয়ার ঘটনা ঘটে। সেখান থেকে অবসাদ তাদের গ্রাস করছে।' অনুপমের মতোই ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট সাহেলি গঙ্গোপাধ্যায়েরও বক্তব্য, 'প্রত্যাশার চাপ ভয়ঙ্কর ভাবে পড়ুয়াদের উপর কাজ করছে। সমাজের আর পাঁচ জনের পাশাপাশি মা-বাবাও সন্তানকে তার প্রাপ্ত নম্বর আর মাইনে দিয়ে বিচার করছেন। সেই চাপ সামাল দিতে না পারাটাও সমান ভাবে দায়ী।' যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের বক্তব্য, 'প্রাদেশিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলির থেকে এই সমস্যা অনেক বেশি কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলির। কারণ সেখানে সারা ভারত থেকে নানা ভাষা, নানা সম্প্রদায়ের পড়ুয়ারা আসেন পড়তে। এই অবধি পৌঁছেও বহু পড়ুয়া অনেক সময়ই ক্যাম্পাস ও হস্টেলের সঙ্গে মানিয়ে উঠতে পারেন না।' আর সেখান থেকে একাকিত্ব অবসাদের চূড়ান্ত পরিণতি আত্মহত্যা হতে পারে বলে মনে করেন সুরঞ্জন। একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, 'শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ুয়াদের সঙ্গে শিক্ষক ও কর্তৃপক্ষের সম্পর্ক কেমন তার উপরেও অনেক কিছু নির্ভর করে।' কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর দেওয়া তথ্যের সবটাই অবশ্য স্বচ্ছ বলে মনে করছে না ছাত্র সংগঠন এসএফআই ও সমাজকর্মীদের অনেকে। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া তথা এসএফআই কর্মী দেবনীল পালের অভিযোগ, প্রকাশিত তথ্যে সব সত্যি নেই। একই সঙ্গে তাঁর উদ্বেগ, দেশের IIT, আইআইএমে যদি এই অবস্থা হয়, তবে হাজার হাজার অন্য সরকারি, বেসরকারি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে কী চলছে!' কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, সাত বছরের আত্মহননকারী পড়ুয়াদের মধ্যে ৫৬ শতাংশ যদি জনজাতি ভুক্ত হয়, তাহলে ক্যাম্পাসে জাতি বৈষম্যের পরিবেশ কি এর নেপথ্যে অন্যতম কারণ? যাদবপুরেই অধ্যাপক মেরুনা মুর্মূর কথায়, 'পরিসংখ্যানের অর্ধেকের বেশিই যদি জনজাতির পড়ুয়া হয়, তাহলে তো সেখানে জাতি পরিচয় এই পরিণতির নেপথ্যে কাজ করছে বলেই মনে হয়।' পড়ুয়াদের একটা বড় অংশের বক্তব্য, অতিমারীর আগে ক্যাম্পাসে মন-মানসিকতা নিয়ে যাও বা খানিকটা সচেতনতা ও পরিষেবা শুরু করা গিয়েছিল, করোনা ও লকডাউন সেই সার্পোট সিস্টেমকেই বর্তমানে গুড়িয়ে দিয়েছে। ফলে উদ্বেগ আরও বাড়ছে।


from Bengali News, Bangla News, বাংলা সংবাদ, বাংলা নিউজ, News in Bengali, কলকাতা বাংলা খবর - Ei Samay https://ift.tt/3pndYiq
Previous article
Next article

Leave Comments

Post a Comment

ads

Articles Ads 1

ads

Advertisement Ads