মহাজাগতিক আবিষ্কারে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বর্ধমানের তিন পড়ুয়ার https://ift.tt/3loiWtI - MAS News bengali

মহাজাগতিক আবিষ্কারে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বর্ধমানের তিন পড়ুয়ার https://ift.tt/3loiWtI

রূপক মজুমদার, নতুন অ্যাস্টেরয়েডের সন্ধান দিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃতি আদায় করলেন বর্ধমানের তিন কলেজ-পড়ুয়া। এ জন্য দ্য ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সার্চ কোলাবরেশন (আইএএসসি)-এর শংসাপত্র পেয়েছেন তাঁরা। কোলাবরেশনের এই প্রকল্পের সঙ্গে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা-ও যুক্ত। শংসাপত্রে নাসার উল্লেখও রয়েছে। মার্চের ৫ থেকে ৩০ তারিখের মধ্যে আয়োজিত অ্যাস্টেরয়েড সার্চ ক্যাম্পেনস-এর 'প্রভিশনাল' তালিকায় নাম রয়েছে ওই পড়ুয়াদের জিএলও০০২০ এবং জিএলও০০৩৬ অ্যাস্টেরয়েড দু'টির। আইএএসসি বস্তুত একটি সিটিজেন সায়েন্স প্রোগ্রাম। যেখানে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে সংগৃহীত জ্যোতির্বিজ্ঞান সংক্রান্ত তথ্য বিশ্বের নানা প্রান্তের সিটিজেন সায়েন্টিস্টদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। সহজ করে বললে যে সব আগ্রহী ব্যক্তি এ কাজের জন্য নাম নথিভুক্ত করেন, তাঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। এ জন্য সফটওয়্যার ও পাসওয়ার্ডও পৌঁছে যায় আগ্রহীদের কাছে। এর পরে ওই তথ্য বা ছবি বিশ্লেষণের কাজ করেন সিটিজেন সায়েন্টিস্টরা। তেমনই একটি প্রকল্পে অংশ নিয়েছিলেন বর্ধমানের ঐশ্বর্য পাঁজা, প্রিয়ম হালদার ও শুদ্ধসত্ত্ব চৌধুরী। ঐশ্বর্য সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী, প্রিয়ম রাজ কলেজে কম্পিটার সায়েন্স দ্বিতীয় বর্ষ আর শুদ্ধসত্ত্ব চণ্ডীগড় ইউনিভার্সিটির চতুর্থ বর্ষে এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়ুয়া। এঁদের দলের নাম বর্ধমান গ্লোবট্রটার্স। ইএএসসি, হার্ডিন-সাইমন ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অফ হাওয়াই-এর সহযোগিতায় সংগৃহীত তথ্য পাঠানো হয় এই তিন সিটিজেন সায়েন্টিস্টের কাছে। ঐশ্বর্য বলেন, 'তথ্য পাঠায় কো-অপারেটিভ এগ্রিমেন্ট। সঙ্গে অ্যাসট্রোমেট্রিকা সফ্টওয়্যারের লাইসেন্স, পাসওয়ার্ড ও স্টাডি-গাইড। সেই সফটওয়্যার ব্যবহার করে তথ্য বিশ্লেষণে খোঁজ মেলে অ্যাস্টেরয়েডের।' আইএএসসি-র ডেটাবেসে বর্তমানে এই দুই অ্যাস্টেরয়েড পি১১ডিএসএআই এবং আইইউবি৪২৭১ নামে সংরক্ষিত। ঐশ্বর্যদের আবিষ্কারের পর এই দুই অ্যাস্টেরয়েডের অ্যাস্ট্রো-স্পেকট্রোস্কোপি করেন বর্ধমান বিজ্ঞান চর্চা কেন্দ্রের অধিকর্তা নিখিলেশ বিশ্বাস। সহযোগিতা করেন শিক্ষক অতনু মাঝি। শুদ্ধসত্ত্ব বলেন, 'পি১১ডিএসএআই-টির ব্যাস ০.৬ মাইল। এটি একটি এম-টাইপ অ্যাস্টেরয়েড, যাতে ১১০ পাউন্ডেরও বেশি প্ল্যাটিনামের অস্তিত্ব আছে।' ঐশ্বর্য জানান, তাঁরা এই দুই গ্রহাণুর নাম বর্ধমান-০১ রাখার আবেদন জানিয়েছেন। প্রিয়ম বলেন, 'অ্যাস্টেরয়েডগুলির আকার নিউ ইয়র্কের মতো একটি শহরের সমান হতে পারে, আবার হতে পারে আমাদের হাতের তালুর মাপের। এগুলি সম্পর্কে জানা, তাদের কক্ষপথ নির্ণয় করা অত্যন্ত জরুরি। ইদানীং অ্যাস্টেরয়েড মাইনিংয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে। কারণ এগুলিতে প্রচুর দামি ধাতু থাকে।' তিন সদ্য তরুণের এই সাফল্যকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। পদার্থবিজ্ঞানী সোমক রায়চৌধুরী বলেন, 'বহু দেশের বহু ছাত্রছাত্রীই অনেক ছোট বয়স থেকে এখন সিটিজেন সায়েন্স প্রজেক্টে অংশ নিচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে সেটা তুলনায় অনেক সীমিত। অনেক সময় শিক্ষক-শিক্ষিকারাও বিষয়টি সম্পর্কে সম্যক অবহিত থাকেন না। সে জায়গা থেকে এই তিন ছাত্রছাত্রীর কাজ, অংশগ্রহণ নিঃসন্দেহে অভিনন্দনযোগ্য।' বিড়লা তারামণ্ডলের অধিকর্তা দেবীপ্রসাদ দুয়ারি বলেন, 'জ্যোতির্বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এখন প্রচুর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। সব তো বিজ্ঞানীদের পক্ষে বিশ্লেষণ করা সম্ভব নয়। তাই সিটিজেন সায়েন্টিস্টদের সাহায্যে এখন অনেক কাজ হচ্ছে। পাশাপাশি প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। এবং ইন্টারনেটের কারণে ছেলেমেয়েরাও অনেক তথ্য জানতে পারছে। কাজেই তাদের মধ্যেও আগ্রহ তৈরি হচ্ছে। ফলে সামগ্রিক ভাবেই একটা উৎসাহ দেখা দিচ্ছে। এবং নাসা বা অন্য প্রতিষ্ঠান এঁদের কাজকে যে স্বীকৃতি দিচ্ছে, সেটাও যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক।'


from Bangla News: বেঙ্গলি খবর, Latest News in Bengali, Breaking News In Bengali, সর্বশেষ সংবাদ | Eisamay https://ift.tt/2VyHEgc
Previous article
Next article

Leave Comments

Post a Comment

ads

Articles Ads 1

ads

Advertisement Ads