সাইটে বহু বেড খালি, রোগী তবু প্রত্যাখ্যাতই https://ift.tt/3eikhgw - MAS News bengali

সাইটে বহু বেড খালি, রোগী তবু প্রত্যাখ্যাতই https://ift.tt/3eikhgw

সোমনাথ মণ্ডল স্বাস্থ্য দপ্তরের ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে, প্রচুর কোভিড বেড খালি রয়েছে হাসপাতালে। কিন্তু বাস্তব বলছে, চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে করোনা রোগী হাসপাতাল পৌঁছলেও বেড না-পেয়েই ফিরতে হচ্ছে বেশ কিছু ক্ষেত্রে। কলকাতারই যাদবপুরে করোনা আক্রান্ত হয়ে জ্বর-শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন বছর পঞ্চান্নর অসীম সাহা। বাড়াবাড়ি হতে গত বৃহস্পতিবার তাঁকে যাদবপুরের কেপিসি হাসপাতালে নিয়ে যান দাদা তপন সাহা। বেড নেই জানিয়ে সেখান থেকে চিকিৎসকরা তাঁকে 'রেফার' করে দেন এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে। সেখানেও জোটে প্রত্যাখ্যান। কারণ নাকি একই, বেড নেই! দু'টি হাসপাতাল ঘোরার পর স্বাস্থ্য দপ্তরে লাগাতার ফোন করেও ভর্তির ব্যাপারে সাহায্য মেলেনি বলে দাবি তাঁর পরিবারের। অনেক দৌড়ঝাঁপ করে সোমবার পর্যন্ত তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে পারেননি পরিবার। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে অক্সিজেন সাপোর্টে ঝুঁকি নিয়ে ঘরে রাখতে হয়েছে রোগীকে। পরিবারের বাকিদের দিন কাটছে সংক্রমণের আতঙ্কে। ঘটনার কথা জানার পর স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীর বক্তব্য, 'উপসর্গ দেখা দিলে স্বাস্থ্য দফতরের ফোন নম্বরে যোগাযোগ করতে হবে। ডাক্তারবাবুরা রয়েছেন। তাঁরা পরামর্শ দেবেন। প্রয়োজন বুঝলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেবেন।' যদিও অসীমের পরিবার স্থানীয় যে চিকিৎসককে দেখিয়েছিলেন, শ্বাসকষ্টের সমস্যার পর তিনিও রোগীকে ভর্তির পরামর্শই দিয়েছিলেন। কোভিড রোগীর পরিবারের অভিযোগ, স্বাস্থ্য দপ্তরের ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, বৃহস্পতি এবং শুক্রবার এম আর বাঙ্গুরে খালি ছিল প্রায় ২৫০টি কোভিড বেড। কিন্তু অভিজ্ঞতা কী বলছে? রোগীর দাদা তপন বলেন, 'হাসপাতালে ঢোকার সময়ই আটকানো হয়। তার পর বলে দেওয়া হয় বেড নেই।' তপন স্বাস্থ্য দপ্তরের হেল্পলাইন নম্বরে যোগযোগ করেন। লাভ হয়নি। তাঁর কথায়, 'যখন রোগী নিয়ে টানাপড়েন চলছে, তখন বেশ কয়েকবার কল কেটে যায়। তিনবার ফোন ধরে স্বাস্থ্যকর্মীরা বলেন, আমরা বিষয়টি দেখছি। কিন্তু কেউ বাড়িতে এসে খোঁজ নেয়নি। ভর্তিরও ব্যবস্থা হয়নি। যাদবপুরে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের তরফে অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। এই সম্বল নিয়েই দিন কাটছে।' অসীমের মতো এমন রোগী হয়রানির টুকরো ছবি ধরা পড়ছে রাজ্যের বহু হাসপাতালেই। তবে বেড না পাওয়ার যে অভিযোগ উঠছে, তা প্রতিফলিত হচ্ছে না স্বাস্থ্য দপ্তরের ওয়েবসাইটে। সেখানকার তথ্য বলছে, করোনা চিকিৎসা হচ্ছে ৫০টি সরকারি এবং ১২টি বেসরকারি হাসপাতালে। তার মধ্যে কোভিড বেড রয়েছে ৭৭৭৬টি। রোগী ভর্তি রয়েছেন ৪৪.৭৪ শতাংশ। বাকি বেড খালি রয়েছে। তৈরি রাখা হয়েছে ভেন্টিলেটার ব্যবস্থাও। করোনা হাসপাতালে আইসিইউ, এইচডিইউ বেড রয়েছে ১৮৩৮টি। ভেন্টিলেটর সুবিধা রয়েছে ৫২৮টি বেডে। তার পরও গুরুতর অসুস্থ কোভিড রোগী কেন বেড পাচ্ছেন না, তার সদুত্তর দিতে পারেননি স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীও। এদিনই অবশ্য মালদহে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, সাড়ে চার হাজার বেড বাড়বে রাজ্যে। ১০০টি হাসপাতাল করোনার জন্য তৈরি রয়েছে, ৫৮টি বেসরকারি হাসপাতাল নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের বেড বাড়ানোর জন্য রাজ্য সরকার টাস্কফোর্সও তৈরি করেছে। সোমবার সব মেডিক্যাল কলেজ স্তরের হাসপাতালগুলিকে স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য নির্দেশ দেন, অবিলম্বে যেন করোনা চিকিৎসার উপযোগী শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়। প্রয়োজনে অ-করোনা বিভিন্ন শাখার বেডকে কোভিড ম্যানেজমেন্টের আওতায় আনার কথা বলেন অধিকর্তা। প্রয়োজনে যাবতীয় পরিকল্পিত অস্ত্রোপচার আপাতত স্থগিত করে দিতে বলেন তিনি। সব বিভাগের চিকিৎসক, নার্স ও প্যারামেডিক্যাল স্টাফদের করোনা পরিষেবায় কাজে লাগাতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম একটি নির্দেশে জানান, বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের যে বিপুল সংখ্যক চিকিৎসক সাধারণত রোগী পরিষেবার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত থাকেন না, অ্যানাটমি, ফিজিয়োলজি, ফার্মাকোলজি, ফরেন্সিক মেডিসিন, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের সেই সব শিক্ষক-চিকিৎসক ও স্নাতকোত্তর পড়ুয়াদের আপাতত বিভিন্ন কোভিড হাসপাতালে ডিউটি দেওয়া হবে। সোমবার সন্ধ্যায় রবীন্দ্র সদন প্রেক্ষাগৃহে উপস্থিত বেসরকারি হাসপাতালের কর্তাদের সঙ্গেও নবান্ন থেকে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন মুখ্যসচিব। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ক্লিনিক্যাল এস্ট্যাবলিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মূলত বেড বৃদ্ধির উপরেই জোর দেওয়া হয় বৈঠকে। পরিকল্পিত অস্ত্রোপচার আপাতত বন্ধ রাখার কথা বলা হয় বেসরকারি হাসপাতালগুলিকেও। তাদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ হসপিটালস অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার সভাপতি রূপক বরুয়া জানান, বর্তমান এই ভয়াবহ করোনাকালে বেডের অভাবে চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়ার উপক্রম। কী উপায়ে তা সামাল দেওয়া যায়, তা নিয়েই এদিনের বৈঠকে আলোচনা হয়, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল যে কোনও উপায়ে বেড বৃদ্ধি। রাজ্যের চিকিৎসক সংগঠনগুলির তরফ থেকে মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে দাবি করা হয়েছে, স্টেট জেনারেল হাসপাতালসহ সব সরকারি হাসপাতালেই কোভিড ওয়ার্ড খুলতে হবে। সব প্রাইভেট হাসপাতালে ৫০ শতাংশ বেড কোভিড চিকিৎসার জন্য অধিগ্রহণ করতে হবে। চিকিৎসক মানস গুমটা বলেন, 'সচেতন না হয়, তা হলে আগামী সময়ে ভয়ানক পরিস্থিতির মুখে পড়তে হতে। হাসপাতালগুলিতে আরও বেডের সংখ্যা বাড়াতে হবে। প্রশাসনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা উচিত।' টাটকা ভিডিয়ো খবর পেতে সাবস্ক্রাইব করুন এই সময় ডিজিটালের পেজে। সাবস্ক্রাইব করতে এখানে ক্লিক করুন।


from Bangla News: বেঙ্গলি খবর, Latest News in Bengali, Breaking News In Bengali, সর্বশেষ সংবাদ | Eisamay https://ift.tt/3akmRkX
Previous article
Next article

Leave Comments

Post a Comment

ads

Articles Ads 1

ads

Advertisement Ads