'লা নিনা'র হাতযশে উত্তর ভারতে জমজমাট শীত, তবে টানা ঠান্ডার আশা কম কলকাতায় https://ift.tt/2VklAlK - MAS News bengali

'লা নিনা'র হাতযশে উত্তর ভারতে জমজমাট শীত, তবে টানা ঠান্ডার আশা কম কলকাতায় https://ift.tt/2VklAlK

কমলেশ চৌধুরী ২০১২-২০১৩ মরসুমের শীতে বেজায় ঠান্ডা পড়েছিল কলকাতায়। সেই শেষ বার ডিসেম্বরে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছিল কলকাতার পারদ, পরে জানুয়ারিতে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তার পর আর দশের নীচে নামেনি মহানগরের তাপমাত্রা। এ বারও সেই আশা কম। সম্ভাবনা কম একটানা জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়ারও। রবিবার শীতের আউটলুকে ঠারেঠোরে সে কথা বলে দিয়েছে নয়াদিল্লির মৌসম ভবন। অথচ উত্তর ভারত জুড়ে এ বার কনকনে ঠান্ডা। গোটা শীতে দাপট থাকবে। কিন্তু দক্ষিণবঙ্গের কপালে বঞ্চনা! যেমন নভেম্বরে হয়েছে, প্রায় একই পরিণতি হতে চলেছে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যেও। তবে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে ঠান্ডার দাপট ভালোই থাকবে। গ্রীষ্মে চোখ থাকে সর্বোচ্চ তাপমাত্রায়, শীতের যাবতীয় অঙ্ক সর্বনিম্ন তাপমাত্রাকে ঘিরে। সেই অঙ্ক আগাম কষেই মৌসম ভবন জানিয়েছে, ঠান্ডার দাপট সবচেয়ে বেশি হবে রাজস্থানে। তিন মাস মিলিয়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার গড় ১.১৭ ডিগ্রি কম হতে পারে। দিল্লি, পাঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিসগড়, ওডিশা তো বটেই, মহারাষ্ট্রের বিদর্ভ, মারাঠাওয়াড়াও অন্যান্য বারের তুলনায় দাপুটে ঠান্ডার সাক্ষী হবে। সেই তুলনায় বিহার, ঝাড়খণ্ডের প্রাপ্তি কম। দক্ষিণবঙ্গের আরও কম। উল্টে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার গড় ০.১৪ ডিগ্রি বেশি হওয়ার সম্ভাবনা। এই পূর্বাভাসকে কী ভাবে বিশ্লেষণ করছেন আবহবিদরা? মৌসম ভবনের ডিরেক্টর জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বলেন, 'এই মুহূর্তে প্রশান্ত মহাসাগরে লা নিনা পরিস্থিতি চলছে। এর অর্থ, মহাসাগরের মধ্য ও পূর্বাংশ জলতলের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের কম রয়েছে। এর ফলে বায়ুপ্রবাহে যে বদল হয়, তাতে উত্তর ভারতে জাঁকিয়ে শীত পড়ে। যদিও এর সরাসরি প্রভাব পূর্ব ভারতে তেমন পড়ে না।' কেন? তার খানিকটা কারণ ব্যাখ্যা করে মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞানের অধ্যাপক রঘু মুর্তুগুড্ডে বলেন, 'লা নিনা দশা থাকলে সাইবেরিয়া ও দক্ষিণ চিনের কনকনে বাতাস সরাসরি উত্তর ভারতে ঢুকে পড়ে। একই সঙ্গে দেশের উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে বায়ুচাপের এমন ফারাক তৈরি হয়, যার ফলে উত্তর ভারত থেকে হিমেল বাতাসের একটা বড় অংশ মধ্য ভারত হয়ে দক্ষিণের দিকে সরে। পূর্ব ভারতে যায় তুলনায় কম।' বিদর্ভ, মারাঠাওয়াড়ায় জমিয়ে ঠান্ডা আর বিহার-ঝাড়খণ্ড-গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের ভাঁড়ারে টানের আভাসের নেপথ্যে অন্যতম হিমেল বাতাসের এই ভাগাভাগিই! মৌসম ভবনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান, উপমহানির্দেশক সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, 'এই পূর্বাভাস তিন মাস মিলিয়ে। ফলে ঠান্ডা পড়বে না, এমন নয়। কিন্তু যেটা বলা যায়, একটানা জাঁকিয়ে ঠান্ডা থাকবে না বা ৯-১০ ডিগ্রিতে কলকাতার তাপমাত্রা নামবে, এমন সম্ভাবনা কম থাকবে। আবার এমনও হতে পারে, ফেব্রুয়ারিতে দ্রুত শীতের আয়ু শেষ হয়ে গেল! তখন তার প্রভাব গোটা মরসুমের অঙ্কে পড়বে।' আরও একটি তাৎপর্যপূর্ণ আভাস দিয়েছে মৌসম ভবন। উত্তর ও পূর্ব ভারতে দিনে ঠান্ডা কম লাগতে পারে। মৃত্যুঞ্জয়ের ব্যাখ্যা, 'আকাশ পরিষ্কার থাকবে। তাতে রাতের তাপমাত্রা কমার সুযোগ তৈরি হলেও, দিনের তাপমাত্রা বেশি থাকতে পারে।' এখনও পর্যন্ত যা চিত্র, তাতে অক্টোবর-নভেম্বর থেকেই হাড়কাঁপানো ঠান্ডা উত্তর ভারতে। দু'মাসেই বেশ কয়েকটি পুরোনো রেকর্ড ভেঙেছে দিল্লিতে। এ দিনও রাজধানীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল সাত ডিগ্রি। কলকাতায় সেখানে নভেম্বরের সর্বনিম্ন ১৫.৪ ডিগ্রি। তাপমাত্রা যখন সবে নামতে শুরু করেছিল, তখনই হাজির হয় খলনায়ক ঘূর্ণিঝড় নিভার। ডিসেম্বরের শুরুতে তাপমাত্রা একটু কমবে, তবে ফের একটি গভীর নিম্নচাপের আশঙ্কা তামিলনাড়ু লাগোয়া বঙ্গোপসাগরে। এক আবহবিদের কথায়, 'কলকাতায় ভালো ঠান্ডা পড়ার জন্য সাগর শান্ত হওয়া জরুরি।' না-হলেই বারবার ছন্দপতন! দেশে প্রবল গরম আর খরার কারণ হওয়ায় 'এল নিনো' শব্দটির সঙ্গে সুপরিচিত আমজনতা। স্প্যানিশে এর অর্থ ছোট্ট ছেলে। 'লা নিনা' ঠিক তার উল্টো দশা। স্প্যানিশে যার অর্থ, ছোট মেয়ে। 'খুকি'র হাতযশে দিল্লি জব্বর ঠান্ডা পাবে, এটা জলের মতো পরিষ্কার। কিন্তু কলকাতার ভাগ্য কতটা খুলবে, তা সময়ই বলবে। এই সময় ডিজিটাল এখন টেলিগ্রামেও। সাবস্ক্রাইব করুন, থাকুন সবসময় আপডেটেড।


from Bangla News: বেঙ্গলি খবর, Latest News in Bengali, Breaking News In Bengali, সর্বশেষ সংবাদ | Eisamay https://ift.tt/2KM0ydP
Previous article
Next article

Leave Comments

Post a Comment

ads

Articles Ads 1

ads

Advertisement Ads