রিমেলের মন্দগতিই ভাসাল দুই বাংলাকে, দুর্যোগ কাটবে দক্ষিণবঙ্গে! সতর্কবার্তা উত্তরে https://ift.tt/sh7X2wO - MAS News bengali

রিমেলের মন্দগতিই ভাসাল দুই বাংলাকে, দুর্যোগ কাটবে দক্ষিণবঙ্গে! সতর্কবার্তা উত্তরে https://ift.tt/sh7X2wO

এই সময়: উত্তর-পূর্ব দিক থেকে এগিয়ে আসা হাওয়ার বাধা ঠেলে দ্রুত গতিতে এগোতে পারছিল না ‘রিমেল’। ‘রিমেলে’র জেরে রবিবার রাতে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে গিয়েছে। তবে ‘রিমেল’ নিজে এগোচ্ছিল ঘণ্টায় মাত্র ৬ থেকে ১৩ কিলোমিটার বেগে। এই মন্দগতির কারণেই ল্যান্ডফলের ১৪ ঘণ্টা পরেও ‘অতি তীব্র’ ঘূর্ণিঝড় সামান্য কিছুটা শক্তি খুইয়ে ‘ঘূর্ণিঝড়ে’র চেহারা নিয়েছিল। সাধারণত ল্যান্ডফলের পরে এই সময়ের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি কমতে কমতে তা গভীর নিম্নচাপ বা আরও দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়। কিন্তু ক্ষমতায় ‘সুপার সাইক্লোন’ আইলা বা উম্পুনের তুলনায় অনেকটা খাটো হওয়া সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত বড় প্রভাব ফেলতে পেরেছে ‘রিমেল’। রবিবার রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ বাংলাদেশের খুলনা ডিভিশনের পটুয়াখালি জেলার মংলার কাছাকাছি ‘তীব্র ঘূর্ণিঝড়’ হিসেবে ল্যান্ডফল করে ‘রিমেল’। সেই সময়ে ঘণ্টায় মাত্র ১১ কিমি গতিতে স্থলভাগের দিকে এগোচ্ছিল সে। সোমবার সকালে ‘রিমেল’-এর এগিয়ে চলার গতি কিছুটা বাড়ে ঠিকই, কিন্তু সেটাও খুব বেশি নয়—ঘণ্টায় মাত্র ১৫ কিলোমিটার গতিতে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের দিকে এগোচ্ছিল সে। এই ‘অতি ধীর’ গতিই সোমবার সন্ধে পর্যন্ত প্রবল বৃষ্টিতে ভাসাল এপার বাংলার কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, পটুয়াখালি, খুলনা ও ভোলা জেলার বিস্তীর্ণ অংশকে।গত ১৫ বছরে মে মাসে দুই বাংলা চারটে শক্তিশালী সাইক্লোনের মুখে পড়েছে। এর মধ্যে ২০২০-র উম্পুন ছিল ‘সুপার সাইক্লোন’। ২০০৯-এর আইলা, ২০২১-এর ইয়াস এবং সদ্য আসা রিমেল ‘তীব্র সাইক্লোনের’ পর্যায়ে পড়ে। পুনের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মেটিওরোলজি (আইআইটিএম) জানাচ্ছে, আইলার প্রভাবে ২০০৯-এর ২৫ মে কলকাতা ১২০ মিমি বৃষ্টি পেয়েছিল। ২০২০-এর ২১ মে উম্পুন কলকাতায় ২৩৬.৩ মিমি বৃষ্টি নামিয়েছিল। ইয়াসের জন্য ২৮ মে ২০২১-এ কলকাতায় বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ৮৯.৬ মিমি। আর রিমেলের জন্য ২০২৪-এর ২৬ মে সকাল থেকে ২৭ মে বিকেল ৫:৩০ পর্যন্ত কলকাতায় বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ১৮৯.৫ মিমি।ল্যান্ডফলের পরেও দীর্ঘক্ষণ শক্তি ধরে রাখা এবং ‘রিমেল’-এর প্রভাবে এত বেশি পরিমাণে বৃষ্টির কারণের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আইআইটিএম-এর জলবায়ু বিশেষজ্ঞ এবং দেশের সাইক্লোন মডেল নির্মাতাদের অন্যতম পার্থসারথি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘অত্যন্ত ধীর গতিতে এগোচ্ছিল বলেই ‘রিমেল’ বহুক্ষণ সমুদ্রের কাছাকাছি থেকেছে। ফলে জলীয় বাষ্পের জোগান পেতে তার কোনও সমস্যা হয়নি। ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষেত্রে জলীয় বাষ্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জলীয় বাষ্পের জোগান না পেলে ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি কমতে থাকে।’আবহবিদরা জানাচ্ছেন, তুলনায় উম্পুন ল্যান্ডফলের পরেই ঘণ্টায় ২৮ কিলোমিটার গতিতে এগোতে শুরু করেছিল এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই তার গতি ঘণ্টায় ৩০ কিমি হয়। কিন্তু ‘রিমেল’-এর এমন ধীরগতি কেন? এর সম্ভাব্য কারণ হিসেবে আবহবিদদের একাংশ মনে করছেন, উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে এগিয়ে আসা বাতাসের স্রোত ‘রিমেল’-এর পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ওই স্রোত ঠেলে ঘূর্ণিঝড় বেশি জোরে এগোতে পারেনি। মোটের উপর একই জায়গায় ঘুরপাক খেয়েছে এবং দুই বাংলার দক্ষিণ দিকের জেলাগুলোকে প্রবল বৃষ্টিতে ভাসিয়েছে। আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়েছে, সোমবার বিকেলের দিক থেকে ঘূর্ণিঝড়ের দ্রুত শক্তিক্ষয় শুরু হয় এবং সে প্রথমে গভীর নিম্নচাপ ও পরে নিম্নচাপে পরিণত হয়ে মেঘালয়ের দিকে এগিয়েছে। আজ, মঙ্গলবার আর দক্ষিণবঙ্গের কোনও জায়গাতেই ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তবে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোর বিভিন্ন জায়গায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তা রয়েছে।


from Bengali News, বাংলা নিউজ, Bangla News, Ajker Bangla Khabar, Latest Bengali News - Eisamay https://ift.tt/sfL5Gxq
Previous article
Next article

Leave Comments

Post a Comment

ads

Articles Ads 1

ads

Advertisement Ads