নিজেই নীরব মোদী, চাপে গেরুয়া শিবির https://ift.tt/2Y7pQqi - MAS News bengali

নিজেই নীরব মোদী, চাপে গেরুয়া শিবির https://ift.tt/2Y7pQqi

এই সময়: ঘটনার পর দেড় দিন কেটে গিয়েছে। এখনও নীরব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে দলের অন্দরে সরব হয়েছেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের অনেকেই। 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনি তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে 'উত্ত্যক্ত' করতে গিয়ে আখেরে বিজেপির অস্বস্তিই বাড়ল বলে মনে করছেন বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ। তবে দলে এখন এক রকম 'কেন্দ্রীয় শাসন' কায়েম। তাই, তাঁদের মুখে কুলুপ। শনিবার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের অনুষ্ঠান শেষে রাজ্য বিজেপির দু'-একজন নেতা অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনি দেওয়ার নিন্দা করেছিলেন। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁরা বুঝে যান, পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এ ক্ষেত্রে 'অফেন্স ইজ দ্য বেস্ট ডিফেন্স'-এর কৌশল নিয়েছেন। তাই কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অমিত মালব্যর মতো দলের কেন্দ্রীয় নেতারা ঘটনার নিন্দা করার বদলে টুইট করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতা না-দেওয়ার সিদ্ধান্তকেই তুলোধনা করছেন। ফলে, শমীক ভট্টাচার্যর মতো বাংলার বিজেপি নেতাদের সুর অন্য রকম হতেও বেশি সময় লাগেনি। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের অনুষ্ঠানে 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনি তোলাকে অনভিপ্রেত আখ্যা দিয়েও মমতার বিরুদ্ধে বেশি সরব হতে শুরু করেছেন তাঁরা। রাজ্য বিজেপির অনেক নেতাই মনে করছেন, নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সরকারি অনুষ্ঠানে 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনি তোলা মোটেই সমীচীন কাজ হয়নি। বিধানসভা ভোটের আগে এতে তৃণমূলের পালেই হাওয়া আসবে বলে তাঁদের অভিমত। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতাদের 'রোষে' পড়ার ভয়ে তাঁরা সেই মনের কথা মুখে আনছেন না। ঘনিষ্ঠ মহলে অবশ্য তাঁরা অনেকেই উষ্মা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, দলের ভিন রাজ্যের নেতারা কিছুতেই বাঙালিদের মনের তল পাচ্ছেন না। এর আগেও বাংলার সংস্কৃতি নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের একাংশের আলটপকা মন্তব্যের জন্য বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকে। মাস খানেক আগে যেমন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা বাংলায় এসে টুইট করেছিলেন যে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম শান্তিনিকেতনে। এর পর আবার শ্রীচৈতন্য সম্পর্কে মন্তব্য ঘিরেও বিভ্রান্তি ছড়ায়। রাজ্য বিজেপি নেতাদের এহেন বিড়ম্বনার আঁচ পেয়ে তৃণমূলও কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। রবিবার তৃণমূলের তরফে ব্রাত্য বসু সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, 'শনিবারের ঘটনার পর বিজেপির বাংলার নেতারা মিনমিন করে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। কিন্তু তার পর উত্তর ভারতের নেতারা ওই ঘটনাকে সমর্থন করে টুইট শুরু করায় এই রাজ্যের বিজেপি নেতারা পিছু হটলেন।' ভিক্টোরিয়ার ঘটনায় রাজ্যের শাসকদল কী ভাবে ডিভিডেন্ড তুলবে, তার ব্যাখ্যায় রাজ্য বিজেপির এক শীর্ষনেতা বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইছেন, তাঁর সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে যাতে কোনও ভাবে ভাগ না-বসে। ঠিক উল্টোটা চাইছি আমরা। তাই, মিম বা আব্বাসের দল থেকে ভোট-অঙ্কের লাভ খুঁজছি। কিন্তু শনিবার যা হল, তাতে সংখ্যালঘু ভোট আরও ঐক্যবদ্ধ ভাবে তৃণমূলের দিকে যাবে।' রাজ্য বিজেপির আর এক নেতার যুক্তি, 'লোকসভায় শেষ দফার ভোটের আগে কলকাতায় বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনায় লাভ হয়েছিল তৃণমূলের। ওই দফায় একটি আসনও আমরা পাইনি। শনিবার নেতাজি জয়ন্তী অনুষ্ঠানে জয় শ্রীরাম ধ্বনি সেই ঘটনাই মনে করিয়ে দিচ্ছে। নেতাজিও কিন্তু বাঙালি ভাবাবেগের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে। তাই চিন্তা হচ্ছে।' গেরুয়া শিবির সূত্রের খবর, এই রাজ্যে ধর্মের পাশাপাশি বাঙালি জাত্যভিমানের বিষয়টিও যে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ, সেটা বহু চেষ্টা করেও দিল্লির নেতাদের বোঝাতে পারছেন না বঙ্গ-বিজেপির উদারপন্থী নেতারা। দলের অন্দরে তাঁদের যুক্তি, উচ্চশিক্ষিত ও বিদ্বান হিসেবে পরিচিত বাঙালির একাংশ ইদানীং কিছুটা হলেও গেরুয়া শিবিরের দিকে ঝুঁকছেন। শনিবারের ঘটনার জেরে তাঁরা ফের বিজেপি থেকে মুখ ফেরাবেন না, তার গ্যারান্টি কোথায়? আবার দলের রাজ্য নেতৃত্বের একাংশের প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা কি সম্মতিরই লক্ষণ? রাজ্য বিজেপির অনেকেরই মতে, সরকারি অনুষ্ঠানে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনি তোলা ঠিক হয়নি- মোদী তাঁর বক্তৃতায় বিষয়টি একবার উল্লেখ করলে মুহূর্তে 'খেলা ঘুরে যেত'। সরকারি অনুষ্ঠানে ওই ধ্বনি পরিকল্পিত বলেও সন্দেহ রাজ্য বিজেপির নেতৃত্বের একাংশের। কারণ, অনুষ্ঠানের আয়োজক কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক হলেও আমন্ত্রণপত্র বিলির পুরোভাগে ছিলেন বিজেপি নেতারাই। সূত্রের খবর, শনিবার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে নেতাজি জয়ন্তীর মূল অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতের সংখ্যা ছিল প্রায় হাজার দেড়েক। তার মধ্যে এক হাজার আমন্ত্রণপত্র বিজেপি থেকেই বিলি হয়েছিল। বিজেপির রাজ্য কমিটির এক সদস্যের কথায়, 'বঙ্গ বিজেপির বহু নেতার হাতেও অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র আসেনি। ভিন রাজ্যের কিছু নেতা কার্ড বিলির দায়িত্বে ছিলেন। তাঁরা নিজেদের ইচ্ছেমতো কার্ড বিলি করেছেন।' ওই বিজেপি নেতার কথায়, 'এমন অনেকেই অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন, যাঁদের সঙ্গে বাঙালি সংস্কৃতির কোনও সম্পর্ক নেই।' বিজেপির তাত্ত্বিক নেতা স্বপন দাশগুপ্তর অবশ্য মন্তব্য, 'শনিবারের ঘটনায় কার লাভ হল, কার ক্ষতি, তা সময়ই বলবে।' এই সময় ডিজিটাল এখন টেলিগ্রামেও। সাবস্ক্রাইব করুন, থাকুন সবসময় আপডেটেড। জাস্ট ।


from Bangla News: বেঙ্গলি খবর, Latest News in Bengali, Breaking News In Bengali, সর্বশেষ সংবাদ | Eisamay https://ift.tt/3a1Ff0N
Previous article
Next article

Leave Comments

Post a Comment

ads

Articles Ads 1

ads

Advertisement Ads