করোনায় রোগী মরলেই ডাক্তারদের কপালে জুটছে নিগ্রহ, সংকট বাড়ছে ইরাকে https://ift.tt/33XZQjT - MAS News bengali

করোনায় রোগী মরলেই ডাক্তারদের কপালে জুটছে নিগ্রহ, সংকট বাড়ছে ইরাকে https://ift.tt/33XZQjT

এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: চিকিত্‍‌সক হিসেবে এমন একটা দিনের জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত ছিলেন না! কয়েকটা লোক তাঁকে ঘিরে ধরে পেটাচ্ছে। মারমুখী উন্মত্ত জটলার কেউই শুনতে চাইছেন না তাঁর কথা। লোকগুলোর রাগের বহির্প্রকাশ ঘটছে এক-একটা লাথি-ঘুসিতে। এতগুলো লোকের যুগপত্‍‌ আক্রমণের মুখে গুটিসুটি মেরে মাটিতে বসে পড়েছিলেন। তার পর, আর কিছু খেয়াল নেই। মারের চোটে জ্ঞান হারিয়েছিলেন ডাক্তার তারিক আল-শিবানি। যে লোকগুলি তাঁকে এমন নির্মম ভাবে পিটিয়েছিল, ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে তাদেরই কোভিড আক্রান্ত এক স্বজনকে বাঁচানোর জন্য সবরকম চেষ্টা করেছিলেন ওই ইরাকি ডাক্তার। তাঁর টিম। যদিও, শেষ রক্ষা করতে পারেননি। সেই 'ব্যর্থতা'র সাজা তাঁকে মাথা পেতে নিতে হয়েছে। এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ইরাকের দক্ষিণের শহর নজাফের আল-আমাল হাসপাতালের বছর ৪৭-এর ডিরেক্টরকেও এমন নিগ্রহের মুখে পড়তে হয়েছে। গোট শরীরে নিগ্রহের দাগ নিয়েই তিনি কর্তব্যে অবিচল। একজন চিকিত্‍‌সক হিসেবে পালানোর পথ নেই। 'চিকিত্‍‌সা করবেন কী, সব ডাক্তারই ভীত!' কুফার বাড়িতে বসে বলেছিলেন নিগৃহীত ওই চিকিত্‍‌সক। ২৮ অগস্ট তাঁর উপর হামলা হয়েছিল। ইরাকের এই ডাক্তারের কথায়, 'যখনই কোনও রোগী মারা যায়, কী হতে চলেছে ভেবে, ভয়ে আমাদের শ্বাস রুদ্ধ হয়ে আসে।' ইরাকে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। এমন পরিস্থিতি সে দেশের আরও পাঁচ জন ডাক্তারের মতো তিনিও নিজের কাজটা ঠিকমতো করতে পারছেন না। সর্বক্ষণ রোগীর পরিবারের নিগ্রহের ভয়, তাঁদের তাড়া করে বেড়াচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে গৃহযুদ্ধের জেরে ইরাকের স্বাস্থ্য পরিষেবা এমনিতেই বিপর্যস্ত। সীমিত স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর মধ্য়েই কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামেন ইরাকের চিকিত্‍‌সকেরা। এখন মৃত রোগীর পরিবার বেপরোয়া হয়ে যে ভাবে আক্রমণ চালাচ্ছে, তাতে নিজেদের জীবন বিপন্ন করে কেউ আর চিকিত্‍‌সা করার সাহস দেখাতে পারছেন না। তাই কোভিড পজিটিভ কেস বাড়ার সঙ্গেই ইরাকের পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। এহেন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপুঞ্জ সতর্ক করেছে ইরাকে ভাইরাস সংক্রমণ ভয়াবহ আকার নিতে পারে। এই সংকটের মধ্যেই আর্থিক স্থবিরতার চাপে লকডাউন প্রত্যাহার করে নিয়েছে ইরাক। রেস্তোরাঁ খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ধর্মীয় স্থানগুলি উন্মক্ত করা হয়েছে। সিল রয়েছে শুধু সীমান্ত। ইরাকে বর্তমানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লক্ষ ছাড়িয়েছে। রোজ কয়েক হাজার করে নতুন আক্রান্ত বাড়ছে। আট হাজার আক্রান্ত এর মধ্যে মারাও গিয়েছেন। চিকিত্‍‌সক-সহ সামনের সারির স্বাস্থ্যকর্মীরা চাপে থাকায় এই মৃত্যুরমিছিল আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। পরিস্থিতির কথা ইরাকের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অজানা নয়। কিন্তু, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক এ বিষয়ে কিছু বলতে নারাজ। আরও পড়ুন: ডাক্তার তারিক আল-শিবানি নিগ্রহের সিসিটিভি ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। কিন্তু, সিসিটিভির ফুটেজ কী করে সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে গেল, জানা নেই ওই চিকিত্‍‌সকের। তিনি জানান, ওই রোগীকে মরণাপন্ন অবস্থাতেই হাসপাতালে আনা হয়েছিল। রোগীর স্বজনেরা তাঁকে হাসপাতালে আনতে দেরি করেছেন। অথচ, মৃত্যুর দায় স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর তাঁরা চাপিয়ে দিয়েছেন। নিগৃহীত ওই চিকিত্‍‌সকের কথায়, 'আমি এখন নিজেই নিজেকে ঘৃণা করতে শুরু করেছি। যেদিন ইরাকে আমি ডাক্তার হই, সেই দিনটিও আজ আমার কাছে ঘৃণার।' আরও পড়ুন: কী কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ইরাকের ডাক্তাররা কাজ করছেন, তার জন্য সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের দেওয়া একটি পরিসংখ্যান যথেষ্ট। ২০১৮-র এক রিপোর্ট অনুযায়ী, ইরাকে প্রতি হাজার মানুষ পিছু ডাক্তার রয়েছেন ০.৮৩ জন। আর নার্স ২.১ জন। জর্ডনে সেখানে সংখ্যাটা যথাক্রমে ২.৩ ও ৩.২। তার উপর ইরাকে পর্যাপ্ত ওষুধ নেই। অক্সিজেন নেই। জরুরি চিকিত্‍‌সা উপকরণ নেই। এই না-থাকা নিয়েই স্বাস্থ্যকর্মীরা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। এক একজন ডাক্তারকে রোজ ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা করে ডিউটি করতে হচ্ছে। চিকিত্‍‌সকেরা বলছেন, এত চাপ নিয়ে রোজ কাজ করলে, ভুলভ্রান্তি হওয়ার আশঙ্কা কিন্তু থেকে যায়। ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুস্তাফা আল-খাদিমি চিকিত্‍‌সকদের উপর হামলার নিন্দা করেছেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন। এই সময় ডিজিটাল এখন টেলিগ্রামেও। সাবস্ক্রাইব করুন, থাকুন সবসময় আপডেটেড। জাস্ট


from International News in Bengali, আন্তর্জাতিক News, World News Headlines in Bangla https://ift.tt/3coBweN
Previous article
Next article

Leave Comments

Post a Comment

ads

Articles Ads 1

ads

Advertisement Ads